জাতীয়তাবাদের সীমা ও আতঙ্ক

দেশ রূপান্তর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০২৩, ১০:০৩

দেশজুড়ে ঘটে চলা ঘটনা বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্ত; কিন্তু সব ঘটনাই একটা ব্যবস্থার অধীন। ব্যবস্থাটা পুঁজিবাদী। এই ব্যাপারটাকে সবাই যে দেখতে পান তা নয়; কেউ কেউ আছেন দেখেও দেখেন না। পুঁজিবাদীরা আবার জাতীয়তাবাদীও হন। জাতীয়তাবাদী হলে লুণ্ঠন, প্রতারণা, নির্যাতন ইত্যাদি পন্থায় পুঁজি সংগ্রহে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। বৈধতাও এক রকমের থাকে; যা করছেন নিজের জন্য করছেন না, করছেন জাতির জন্য, ভাব করা যায় এই রকমের। এবং জাতি বলতে সবার কথা যদিও বলেন, কিন্তু বোঝান নিজেদের। নিজেদের শ্রেণিকে, অর্থাৎ পুঁজির মালিকদেরই। তাই দেখা যায় আধুনিক কালের ভয়ংকর ভয়ংকর সব জাতীয়তাবাদীরা সবাই পুঁজিবাদী ছিলেন; যেমন হিটলার, মুসোলিনি, ট্রাম্প, কিংবা এখনকার মোদি, পুতিন, ইত্যাদি।


চীন এক সময়ে সমাজতন্ত্রী ছিল, কিন্তু সে যে পুঁজিবাদী হবে তার ইশারা নিজেই তুলে ধরেছিল, প্রথমে জাতীয়তাবাদী হয়ে এবং তারপর দ্রুতই সমাজতন্ত্রের আবরণটা গায়ে চেপে রেখে কার্যক্ষেত্রে আগ্রাসী ধরনের পুঁজিবাদী তৎপরতায় লিপ্ত হয়ে। সারা পৃথিবীর বাজার দখলে সে এখন অস্থির। সস্তায় পণ্য উৎপাদন করছে শ্রমিকদের বঞ্চিত করে, রাজনৈতিক বন্দিসহ বিভিন্ন ধরনের বন্দিদের উৎপাদনের কাজে খাটিয়ে, নানা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্প-কারখানা গড়ে তুলে। তারা ঘুষ দিচ্ছে, প্রতারণা করছে, এবং শেষ পর্যন্ত মস্ত বড় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে। একদিন যে চীন সমাজবিপ্লবের আদর্শ প্রচার করে সারা বিশ্বে বিপ্লবীদের কাছে প্রশংসার এবং বুর্জোয়াদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিল আজ সে স্মরণীয় হয়েছে রোগ ছড়ানোর কৃতিত্বের দরুন। বোঝা যায় পুঁজিবাদ কেমন শক্তিশালী, অপ্রতিরোধ্য ও দুষ্টবুদ্ধিসম্পন্ন।


পুঁজিবাদের প্রগতিশীল ভূমিকাটা বিশ্ব-ইতিহাস ধারণ করে বৈকি। মর্যাদা দিয়েই ধারণ করে। সামন্তবাদের সঙ্কীর্ণতা, অন্ধকারাচ্ছন্নতা ও আত্মসন্তুষ্ট বেষ্টনী ভেঙে ফেলে সে একদিন বের হয়ে এসেছিল; এবং তখন বিশ্বাস করার কারণ ঘটেছিল যে তার কারণে মানুষের মুক্তি অত্যাসন্ন। কিন্তু সে মুক্তি যে এলো না তার মূল কারণ পুঁজিবাদ শ্রেণিশোষণ ব্যবস্থা না ভেঙে উল্টো তাকে আরও গভীর ও ব্যাপক করে ছাড়ল। দ্রুতই রূপ নিল সে সাম্রাজ্যবাদের। সাম্রাজ্যবাদ-কবলিত দেশগুলোতে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী যে লড়াইটা গড়ে উঠেছে তাতে জাতীয়তাবাদীরা থেকেছেন, থেকেছেন সমাজতন্ত্রীরাও। সাম্রাজ্যবাদবিরোধিতার সময়ে জাতীয়তাবাদের একটা প্রগতিশীল ভূমিকা ছিল, কিন্তু যেহেতু জাতীয়তাবাদীদের আকাক্সক্ষাটা মূলত ছিল পুঁজিবাদীই, সমাজতন্ত্রী নয়, তাই ওই জাতীয়তাবাদের ভেতরে একটা দুর্বলতা ছিল অনিবার্য। যে জন্য দেখা যায় যে বিদেশিরা বিদায় হওয়ার পরে জাতীয়তাবাদী স্বদেশিরা যখন ক্ষমতায় বসেছে তখন দেশের মানুষদের সঙ্গে তারা সেই রকমের আচরণই করেছে যে-রকমের আচরণ একদিন বিদেশি শাসকরা করত। অনেক ক্ষেত্রে তাদের আচরণ বিদেশিদের চেয়েও নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে। অন্তর্নিহিত কারণটা ছিল আদর্শিক। আদর্শিকভাবে আগের শাসকগুলোর মতোই পরের শাসকগুলোও পুঁজিবাদীই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও