সতর্ক ও সময়োচিত বাজেটের প্রত্যাশা
‘কেমন বাজেট চাই?’ প্রতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের আগে আগে বিশেষ করে মে মাস জুড়ে প্রশ্নটি সামনে আসে গণমাধ্যমসহ বৃহত্তর জনপরিসরে। বাজেটকে ঘিরে সবস্তরের নাগরিকেরাই তাদের প্রত্যাশা জানান দেন। আর গণমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বরাতে সেই প্রত্যাশাগুলো আমরা সবাই জানতে পারি।
ব্যক্তিগত বিবেচনার জায়গা থেকে বাজেটের কাছে প্রত্যাশাটুকু স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়তো সহজ। তবে বিশেষজ্ঞ হিসেবে আসন্ন অর্থবছরের সরকারি আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনা কেমন হওয়া উচিত—তা নির্মোহভাবে তুলে ধরা মোটেও সহজ নয়।
বিশেষ করে আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট কেমন হওয়া উচিত—এই প্রশ্নের সোজাসাপ্টা উত্তর দেওয়া আরও কঠিন। কারণ করোনা পরবর্তী ধাক্কা সামাল দিয়ে উঠতে না উঠতেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার জেরে আমাদের অর্থনীতিও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। ডলার ব্যয় কমানোর তাগিদের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে নাগরিক সুরক্ষা দেওয়ার চাপ রয়েছে।
অন্যদিকে বছর শেষে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বাজেটে কিছু জনতুষ্টিবাদী উদ্যোগও রাখতে সচেষ্ট থাকবেন। সর্বোপরি বৈশ্বিক বাস্তবতার ঘন ঘন পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার উপযোগী আর্থিক পরিকল্পনা দাঁড় করানোর কথাও মাথায় রাখতে হবে।
এমন বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে আসছে বছরের জন্য কেমন বাজেট হওয়া দরকার—এই প্রশ্নের সোজাসাপ্টা উত্তর দেওয়া তাই কেবল দুরূহই নয়, বরং অনেকটা অসম্ভব। তবুও বলা যায়, আমাদের প্রত্যাশা—আসছে অর্থবছরের জন্য সরকারের আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনায় যেন খুব বেশি উচ্চাভিলাষী না হয়ে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি যথাযথ সংবেদনশীল থাকা যায়।
পাশাপাশি বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় যারা বেশি বিপাকে পড়ছেন সেই প্রান্তিক বা কম আয়ের মানুষগুলোর জন্য সময়োচিত সুরক্ষার ব্যবস্থাও বাজেটে করা হয়। অর্থাৎ, আমাদের প্রত্যাশা একটি সতর্ক ও সময়োচিত বাজেটের।