বিশ্বে ডলারের চাহিদা হ্রাস অবশ্যম্ভাবী
এ সত্য এখন প্রতিষ্ঠিত– বিশ্বব্যাপী রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের মর্যাদা হ্রাস পাচ্ছে। ২০০১ সালে বৈশ্বিক রিজার্ভে ডলারের অংশ ছিল ৭৩ শতাংশ। ২০২১ সালে তা ৫৫ শতাংশে নেমেছে এবং ২০২২ সালে হয়েছে ৪৭ শতাংশ। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, গত বছর ডলারের চাহিদা গত দুই দশকের গড় থেকে ১০ গুণ দ্রুত কমেছে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক লেনদেনে ডলারের অংশ ৩০ শতাংশে নেমে আসা অবিশ্বাস্য কিছু নয়। ঠিক ওই সময়েই অনুষ্ঠিত হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ডলারের সবচেয়ে পতনের ঘটনা ঘটে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন রাশিয়ান বৈদেশিক রিজার্ভের ৩০০ বিলিয়ন ডলার পশ্চিমারা ‘ফ্রিজ’ করে ফেলে। তখন পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশ বিদেশে থাকা তাদের নিজস্ব ডলার রিজার্ভ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ে।
রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভের মতে, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি বাণিজ্য এখন চলে হয় রুবল, না হয় ইউয়ান ব্যবহার করে। রাশিয়া ও ভারত রুপিতে তেলের ব্যবসা করছে। চার সপ্তাহেরও কম সময় আগে লাতিন আমেরিকার প্রথম ব্যাংক হিসেবে ব্রাজিলের ব্যাংকো বকম বিবিএম ক্রস-বর্ডার ইন্টারব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেমের (সিআইপিএস) সরাসরি অংশগ্রহণকারী হিসেবে নিবন্ধন করেছে। সিআইপিএস পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আর্থিক মেসেজিং সিস্টেম সুইফট-এর চীনা বিকল্প। চীনের সিএনওওসি এবং ফ্রান্সের টোটাল কোম্পানি সাংহাই পেট্রোলিয়াম এবং ন্যাচারাল গ্যাস এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ইউয়ান তথা চীনা মুদ্রায় তাদের প্রথম এলএনজি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তাও মার্কিন ডলারকে এড়িয়ে। প্রথম ৩০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ ইউয়ানে হবে, তবে রাশিয়া পরেরটি রুবল তথা রাশিয়ার মুদ্রায় করার চেষ্টা করবে। রাশিয়া এবং বলিভিয়ার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এখন বলিভিয়ানোতে হবে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ডলার সংকট
- ডলারের চাহিদা