
মঙ্গলের জন্য শোভাযাত্রা
বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন কারণে একটি শব্দযুগলের মুখোমুখি হই আমরা– ‘ধর্মানুভূতিতে আঘাত’। প্রায়ই এ দেশের এক শ্রেণির মানুষ বলে থাকে, তাদের ধর্মীয় চেতনায় আঘাত লেগেছে বলে তারা সংক্ষুব্ধ। এই ধর্মানুভূতি নিয়ে দেশে কম রাজনীতি চলে না। প্রগতিশীল লেখক-ব্লগার-প্রকাশক-সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের মতো বর্বর ঘটনাও ঘটেছে এই ‘ধর্মানুভূতি’ নিয়ে। আজকাল সংস্কৃতিকে বাধাগ্রস্ত করতে এই শব্দযুগলের ব্যবহার বেড়েই চলেছে।
কখনও পহেলা বৈশাখ উদযাপন বা মঙ্গল শোভাযাত্রা, কখনও বাউল গানের আসর, আবার কখনও ধর্মেরই নানা প্রথা নিয়ে এই অনুভূতির রাজনীতি চলছে। অথচ বাংলায় বিভিন্ন ধর্মের বিকাশের ইতিহাস পড়লে দেখা যায়, শত শত বছরের এই ঐতিহ্য একই ধর্ম পালনকারীকে কখনও বিব্রত করেনি। যুগ যুগ ধরে কারও ধর্মীয় অনুভূতি আক্রান্ত হয়নি। ইদানীং কেন তবে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি এতটা স্পর্শকাতর হয়ে উঠল? কেন কথায় কথায় আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়? আগেও বলেছি, এটি একটি রাজনৈতিক চাল। বাঙালি-বাংলার মানুষের হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিলীন করার অপচেষ্টা। খুব সুকৌশলে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের মগজ ধোলাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন উৎসব আয়োজনকে উপলক্ষ বানিয়ে একেক ফতোয়ার উদ্ভাবন করা হয়।