কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

এক কেজি মুরগিতে ৫৫ টাকা মুনাফা কী করে সম্ভব

প্রথম আলো কল্লোল মোস্তফা প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৭:৩৪

সম্প্রতি দেশে আমিষের সস্তা উৎস হিসেবে পরিচিত ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। এ বছরের জানুয়ারিতেও যে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, মার্চ নাগাদ তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা। এভাবে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে কেজিতে ১০০ টাকারও বেশি দাম বাড়ার কারণে বিপাকে পড়ে যান নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকে মুরগি কিনতে না পেরে মুরগির গিলা-কলিজা, গলা ও পা কেনার দিকে ঝুঁকেছেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।


ব্রয়লার মুরগির এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে ব্যবসায়ীরা মুরগির বাচ্চা, খাদ্য এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করলেও শুধু এসব উপাদানের মাধ্যমে দুই মাসে এই রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। সরকারি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুরগির খাবারসহ অন্যান্য সব ব্যয় বাড়ার পরও এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদনব্যয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। অন্যদিকে প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে খরচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। তাতে বর্তমান উৎপাদনের খরচ অনুযায়ী, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হতে পারে।


এ ছাড়া প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনও করপোরেট প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে মুরগির উৎপাদনের ব্যয় ১৩০ থেকে ১৪০ টাকার কথা উল্লেখ করে অভিযোগ জানিয়েছে যে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মুরগি বিক্রির ক্ষেত্রে কেজিপ্রতি অন্তত ৬০ টাকা বেশি মুনাফা করেছে। শুধু তাই নয়, বড় কোম্পানিগুলো মুরগির বাচ্চা উৎপাদনের ক্ষেত্রেও একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নিয়ে বাচ্চাপ্রতি ৩০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। পোলট্রি খাতে সরকারের কোনো তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ না থাকার সুযোগে দৈনিক ২ হাজার টন মুরগি এবং ২০ লাখ বাচ্চা বিক্রিতে এভাবে অতিরিক্ত মুনাফা করার মাধ্যমে পোলট্রি খাতের করপোরেট কোম্পানিগুলো ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ৫২ দিনে মোট ৯৩৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।


পোলট্রি খাতে বৃহৎ করপোরেট প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কায়েমের অভিযোগ নতুন নয়। বাজার অর্থনীতির নিয়মে বড় পুঁজি প্রতিযোগিতায় ছোট পুঁজির চেয়ে এগিয়ে থাকে, ফলে ক্রমে বৃহৎ করপোরেট প্রতিষ্ঠানের হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। এর মধ্যে বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের দিক থেকে যদি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা ও তদারকি না থাকে, তাহলে বৃহৎ কোম্পানিগুলো সহজেই বাজারের ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে পারে। বাংলাদেশের পোলট্রি খাতে ঠিক এ ঘটনাটিই ঘটেছে। সেই সঙ্গে করোনা মহামারির সময় প্রায় ৪০ শতাংশ মুরগির খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বড় কোম্পানিগুলোর হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ আরও পোক্ত হয়েছে।


বর্তমানে দেশে পোলট্রি খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার সিংহভাগ উৎপাদন করে অল্প কয়েকটি কোম্পানি, সেই সঙ্গে ডিম ও মাংসের বাজারেরও বড় একটি অংশ তাদের দখলে। নিজেরা উৎপাদনের পাশাপাশি চুক্তি ভিত্তিতে অনেক খামারিকে মুরগি পালনের কাজে লাগাচ্ছে কোম্পানিগুলো। এভাবে মুরগির খাদ্য, বাচ্চা, ডিম ও মাংস উৎপাদনের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েমের মাধ্যমে গোটা পোলট্রি খাতের ওপর একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে গুটিকয়েক বৃহৎ কোম্পানি। এর ফলে কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো মুরগির খাদ্য, বাচ্চা, ডিম ও মাংস উৎপাদনের পরিমাণ ও মূল্যহ্রাস বৃদ্ধি করতে পারে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও