বিএনপিকে নিয়ে একই উপহাস আর কত করবেন ওবায়দুল কাদের
ইদানীং আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তৃতা-বিবৃতি দেখে মনে হয়, তাঁরা আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন না। তাদের সব মনোযোগ বিএনপিকে ঘিরে।
যতই দিন যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যে আত্মঘাতী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন, সে বিষয়ে দলীয় নীতিনির্ধারকদের মাথাব্যথা নেই। এমনকি তাঁদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ যে দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে টার্চার সেল খুলে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, সেসব নিয়েও তারা খুব বিচলিত নন। মাঝেমধ্যে ছাত্রদল-শিবিরের অনুপ্রবেশকারীদের ওপর সব দায় চাপিয়ে ছাত্রলীগকে সাচ্চা সংগঠন হিসেবে প্রমান করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারির) পত্রিকায় এসেছে, নরসিংদীর শিবপুরে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর কারণ কেবল রাজনৈতিক দলাদলি নয়, হাটবাজারের ইজারার ভাগ-বাঁটোয়ারা। যেখানে টাকার গন্ধ, সেখানেই আওয়ামী লীগে কোন্দল।
এ রাজনৈতিক ডামাডোলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণকের মতো ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ‘বিএনপির শেষ খবর কী। বিএনপি এখন খরার কবলে। অচিরেই হাসপাতালে যাবে। নির্বাচনে না গেলে আইসিইউতে যাবে।( প্রথম আলো, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)
ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের আরও নেতা–মন্ত্রী কয়দিন পরপর এভাবে বিএনপিকে আইসিইউতে পাঠাতে চান। আইসিইউ মানে হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট। রোগীর অবস্থা শোচনীয় হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিন্তু ওবায়দুল কাদের সাহেব কীভাবে গণনা করে বললেন, বিএনপি প্রথমে হাসপাতালে যাবে এবং এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে নেওয়া হবে। বিএনপি আইসিউতে গেলে আওয়ামী লীগের লাভ না ক্ষতি?
এত দিন আমরা দেখেছি, দলের নেতা-কর্মীরা অসুস্থ হলে হাসপাতালে যান। আবার সরকারের পুলিশ কিংবা সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের শিকার হয়েও অনেককে হাসপাতালে যেতে হয়। কিন্তু একটি পুরো রাজনৈতিক দলকে কীভাবে হাসপাতালে নেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক? তা-ও হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ড বা কেবিনে নয়, একেবারে আইসিইউতে। করোনাকালে আইসিইউর কথা শুনলে বুকের ভেতরটা ধক্ করে উঠত। আইসিইউতে যাওয়া মানে ফিরে আসা না আসার সুতায় জীবন ঝুলে থাকা।