বস্তি থেকে ফ্ল্যাটে উঠেও কেন তারা সুখী নয়
বরিশালের বাদুল বেগম ৫৫ বছরের জীবনের ৩০ বছর কাটিয়েছেন মিরপুর-১১ এর বাউনিয়াবাঁধ এলাকার কলাবাগান বস্তিতে। মাঝে হারিয়েছেন ছেলে আর ছেলের বউকে। এখন নাতি আর নাতবউ নিয়ে দিন কাটছে তার।
তার মত মানুষদের মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করতে বাউনিয়া বাঁধের স্লুইসগেট এলাকায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ যে পাঁচটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে, তার মধ্যে নির্মাণ শেষ হয়েছে তিনটির। ৫৩৩টি ফ্ল্যাটের মধ্যে পুরোপুরি প্রস্তুত ৩০০টি। এতদিন বস্তিতে থাকা ৩০০ জনকে বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের ৩ অগাস্ট ফ্ল্যাটগুলো হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর একটি টয়লেট রয়েছে প্রতিটি ফ্ল্যাটে। প্রতিটি ভবনে রয়েছে কমিউনিটি হল, দুটি লিফট ও প্রশস্ত সিঁড়ি, অগ্নিনির্বাপণ ও সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা; আছে জেনারেটর, বিদ্যুতের সাব-স্টেশন, প্রশস্ত ওয়াকওয়ে ও সৌন্দর্য্যবর্ধনের জন্য লাইটিংয়ের ব্যবস্থা।
সরকার আশা করেছিল, বস্তির সুযোগসুবিধাহীন কষ্টকর জীবন ফেলে এখানে আসতে আগ্রহী হবে শ্রমজীবী মানুষেরা। কিন্তু হচ্ছে উল্টোটা।
ফ্ল্যাটের বরাদ্দ পেয়েও বাদুল বেগম কেন সুযোগ সুবিধাহীন বস্তিতে থাকছেন?
এই পশ্নে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বললেন, “পাঁচ নম্বর বিল্ডিংয়ের ১২ তালায় ফ্ল্যাট পাইয়া নয় হাজার ট্যাকা জামানত দিয়া রাখছি। কিন্তু উঠলেই তো ভাড়া দেওন লাগব। আবার গ্যাস-কারেন্ট-পানির বিল সব মিলাইয়া ১০ হাজার পইড়া যাব।
“আমার এহন স্বাস্থ্য নাই। বাসাবাড়িত কাম করতে পারি না। নাতির একলার ইনকাম। আমি পইড়া না থাকলে কিছু ইনকাম করলে উঠতে পারতাম। ফ্ল্যাট পাইসি, তয় খরচ দেওয়ার সামর্থ্য আমার নাই। তাই উঠতাছি না।”
ভাড়া সাড়ে চার হাজার টাকা হলেও সব মিলিয়ে ১০ হাজার টাকা পড়ে যাওয়ার কারণের খোঁজ নিতে গিয়ে উঠে এলে বিদ্যুৎ, পানি আর গ্যাসের সিলিন্ডারের দামের বিষয়টি।