এটি আইনি এবং সামাজিক লড়াই
হাজেরা বেগমকে আমরা অনেকেই হয়তো কমবেশি চিনি। চল্লিশ জন সন্তানকে তিনি লালনপালন করছেন মাতৃস্নেহে। তিনি তাদের সবারই ‘মা’। এই সন্তানদের বেশিরভাগই যৌনকর্মীর সন্তান। হাজেরা আপাকে আমার ‘সামাজিক অসমতা’ কোর্সে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কারণ আমরা চেয়েছিলাম হাজেরা আপা এই সন্তানদের নিয়ে তার অভিজ্ঞতা যেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিনিময় করেন। অনেক আলোচনার পাশাপাশি হাজেরা আপা একটি কথা বলেছিলেন, ‘সবার সন্তানই এই দেশে ¯ু‹লে পড়তে পারে, শুধু যৌনকর্মীর সন্তানরা ¯ু‹লে ভর্তি হতে পারে না, কারণ তাদের বাবার পরিচয় নেই।’ বাবার পরিচয় এই সমাজে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতদিন পর্যন্ত সন্তান পিতার মাধ্যমেই পরিচিত হতেন।
কিন্তু হাজেরা বেগমের সন্তানরা পড়াশোনা করছেন। তার এক সন্তান এখন স্নাতক পর্যায়ে পড়ছে। এটি সম্ভব হয়েছে কয়েকজন অসম্ভব হুদয়বান মানুষের জন্য, যারা হাজেরার সন্তানদের কাগুজে পিতা হয়েছেন। পিতার পরিচয় বাদে তারা তাদের মৌলিক অধিকারটুকু অর্জন করতে পারছিল না। সবশেষ হয়তো এই মানুষরাই এগিয়ে নিয়েছেন তাদের। কিন্তু অন্যরা হয়তো পারেননি। এই অধিকারহীনতাই হয়তো অনেকের জীবন থামিয়ে দিয়েছে অনেক কিছু থেকে।