সিলেক্টিভ প্রতিবাদ
ফেসবুক আমার খুব পছন্দের এবং খুব অপছন্দের জায়গা। একই সঙ্গে পছন্দ এবং অপছন্দ করা আদৌ সম্ভব কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কিন্তু সত্যি সত্যি আমি একই সঙ্গে পছন্দ-অপছন্দ দুটিই করি।
আজ যদি বিশ্বজুড়ে ফেসবুক বন্ধের দাবিতে গণভোট হয়, আমি বন্ধের পক্ষে ভোট দেবো। ফেসবুক একেবারে না থাকলে আমি খুব খুশি। কিন্তু সবাই আছে বলে, আমাকেও থাকতে হয়। নইলে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। মাঝে মাস তিনেক আমি ফেসবুকে ছিলাম না। ছিলাম না মানে থাকতে পারিনি। হ্যাকাররা আমার অ্যাকাউন্টটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল।
অনেকেই আরেকটি অ্যাকাউন্ট খুলে ফেসবুকে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমি তাগিদ অনুভব করিনি। অনেক বছর পর এই তিনমাস সময় অনেক ভালো কেটেছে। এই তিনমাসে আমার অনেক সময় বেঁচেছে। অনেকদিন পর বই পড়েছি, সিনেমা দেখেছি। আর এই তিন মাসে আমার ফেসবুকের প্রতি আসক্তিও অনেকটাই কেটে গেছে। ফিরেছি বটে, তবে ফেসবুকে আগের মতো সময় দেই না আর। আপডেটেট থাকার জন্য যতটুকু দরকার, ততটুকুই যথেষ্ট।
ফেসবুক কেন পছন্দ, এর তো হাজারটা যুক্তি আছে। তবে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে মানুষের প্রতিবাদ দেখতে। কিছু একটা হলেই ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বাস্তবে যে ঘরকুনো, মুখচোরা- ফেসবুকে তিনিই বিশাল বিপ্লবী। ফেসবুকের প্রতিবাদের কারণে বাংলাদেশে অনেক অপরাধের বিচার হয়েছে, অনেক অন্যায়ের প্রতিকার হয়েছে। কখনো কখনো মনে হয়, ফেসবুকে ভাইরাল না হলে বুঝি কোনো ঘটনার বিচার হবে না। মানুষের প্রতিবাদ করার এই স্বতঃস্ফূর্ততা আবেগ আমার ভালো লাগে। অন্যায় দেখলে মুখ বুজে থাকার সংস্কৃতি থেকে বেরুতে পারাটাও একটা বড় অগ্রগতি।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ফেসবুকে প্রতিবাদ