দেশের খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক সতর্কবার্তা
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ২০২২ সালের প্রথম দিক থেকেই সতর্ক করে বলছে, ২০২৩ সালে বিশ্বের ৪৫টি দেশে তীব্র খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে, যা বিশ্বের অন্তত ২৭৬ মিলিয়ন মানুষকে মারাত্মক খাদ্য সংকটে ফেলবে। জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তনিও গুতেরেসসহ কৃষিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার বৈশ্বিক ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতির হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সর্বসাম্প্রতিক এক জরিপে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ এখন যথাযথ পরিমাণ খাদ্য খেতে পারছে না। ৮৮ শতাংশ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় গত ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় আঘাত হয়েছিল খাদ্যমূল্যের ক্রম-ঊর্ধ্বগতি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দেশের মানুষকে ২০২৩ সালে খাদ্যনিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন। তিনি কিছুদিন ধরেই তার বিভিন্ন বক্তব্যে ‘দুর্ভিক্ষ’ শব্দটির ব্যবহার করেছেন। যদিও বৈশ্বিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ টেনেছেন। তথাপি বাংলাদেশ যাতে এ ধরনের পরিস্থিতিতে না পড়ে সেজন্য তিনি সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী সাধুবাদ পেতেই পারেন। কারণ, আমাদের শাসক শ্রেণী ও সুবিধাবাদী মহলের সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে, সুদিন-দুর্দিন যা-ই হোক অর্থনীতির শক্তির পাশাপাশি খাদ্যশস্যের উৎপাদনের পরিমাণ স্ফীত ও ভোগের পরিমাণ কম দেখিয়ে মহাড়ম্বরে খাদ্যে স্বনির্ভরতা ও আর্থিক নিরাপত্তার কথা ক্রমাগত সাড়ম্বরে জানান দিয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী সংকটের এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী সে পথে যাননি।