বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা
উর্দু শব্দ 'আওয়াম' থেকে আওয়ামী লীগের নামকরণ, যার অর্থ জনগণ। যখন আমরা পাকিস্তানের অধীন ছিলাম আওয়ামী লীগ তখন সত্যিকার অর্থেই সবচেয়ে সফলভাবে জনগণের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করেছে। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে– সেটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যাই হোক না কেন, আওয়ামী লীগ ছিল অগ্রভাগে। মওলানা ভাসানীর হাতে প্রতিষ্ঠিত এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নির্দেশনায় দলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে গৌরব ও চূড়ান্ত সফলতা নিয়ে আসে। বাঙালিদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার দিক থেকে গত শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে আর কোনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ধারেকাছেও ছিল না।
৫২'র ভাষা আন্দোলন দিয়ে শুরু, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, পঞ্চাশের দশকের শেষ পর্যায় থেকে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ সালে ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের কণ্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের একমাত্র 'মুখপাত্র' হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে দলটি ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে উপমহাদেশে আর কোনো রাজনৈতিক দল এমন খ্যাতি ও নৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন করতে পারেনি।