জিপিএ ফাইভে আত্মতৃপ্তির আপ্তবাক্য
একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন সংস্থায় অসচ্ছল অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার মৌখিক নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল। গত বছর (২০২১) এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদেরই মেধাবী বিবেচনায় তাদের ইন্টারভিউ দিতে ডাকা হয়েছে। রংপুরের মিঠাপুকুর এলাকা থেকে আগত এক ছেলে শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করলাম ‘আমি গতকাল রংপুর থেকে ঢাকায় এসেছি’ ইংরেজিতে কী হবে। শব্দভা-ার, গ্রামার ও উচ্চারণের মাথা খেয়ে সে যা বলতে চেষ্টা করল তাতে হতবিহ্বল আমি বা আমরা তিনজন পরীক্ষক, আয়োজকদের এই শিক্ষার্থীর গত এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট দেখাতে বললাম। সেখানে দেখলাম সে বাংলা, ইংরেজিসহ দশটি বিষয়েই এ-প্লাস পেয়েছে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড তাকে সে মর্মে পাকা মার্কশিটই দিয়েছে।
আশ্চর্য! এই কয়েক বছর আগেও অঙ্ক কিংবা ইতিহাসে, ইসলাম কিংবা ভূগোলে চৌকস হলে এ-প্লাস (অর্থাৎ শতকরা ৮০ ভাগের বেশি নম্বর) আমাদের সময় যাকে ‘লেটার মার্কস’ বোঝাত (সে সময় রেজাল্ট শিটে রোল নম্বরের পাশে এসব সাবজেক্ট আদ্যক্ষর লিখে সম্মান দেখানো হতো) সেটা পাওয়া সম্ভব হতো। তাই আমি বাংলা ও ইংরেজিতে এ-প্লাস নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীর দিকে বারবার তাকালাম। পাশ থেকে আরেকজন পরীক্ষক জানতে চাইলেন গতবার (২০২১) এসএসসি পরীক্ষায় যতদূর জানি মাত্র তিনটি বিষয়ে (তাও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে) পরীক্ষা হয়েছিল, তুমি দশ সাবজেক্টেই এ-প্লাস কীভাবে পেলে? বেচারা শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কিংবা দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রগলভতার প্রাচুর্যে ভরা সুচতুর কর্তৃপক্ষের হয়ে কোনো সৎ কিংবা অসৎ, ইতি কিংবা নেতিবাচক উত্তর কোনোটাই দিতে পারল না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- শিক্ষার্থী
- স্কুল শিক্ষার্থী
- জিপিএ-৫