খামারবাড়ি যেন 'দুর্নীতির বাড়ি'
রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) ঘিরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বহিরাগত প্রভাবশালীর একটি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে ডিএই। নিয়োগ-পদোন্নতিতে দুর্নীতি, দায়িত্বে অবহেলা, জেলা-উপজেলায় বরাদ্দে কমিশন আদায়, কর্মকর্তাদের মধ্যে দলাদলি, সেবা দিতে টাকা লেনদেনসহ নানা অনিয়মে ডুবছে অধিদপ্তরটি। দুর্নীতিবাজের দাপটে ভেঙে পড়েছে শৃঙ্খলা। অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ওই চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। সংশ্নিষ্টরা বলছেন, খামারবাড়িতে অতীতেও এ রকম দুর্নীতি হয়েছে, তবে সাময়িক বরখাস্ত কিংবা বদলির মাধ্যমে বারবার দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়া হয়।
বিশাল সিন্ডিকেট :ডিএই ঘিরে গড়ে ওঠা শক্তিশালী চক্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি আছেন সাংবাদিকও। নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, দরপত্র ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দসহ সবকিছুতেই রয়েছে তাঁদের ছায়া। অধিদপ্তরের এই সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছেন প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের উপপরিচালক (পার্সোনাল) মুহাম্মদ আবদুল হাই, উপপরিচালক (লিগ্যাল ও সাপোর্ট সার্ভিসেস) মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও অতিরিক্ত উপপরিচালক (প্রশাসন-১) মোহাম্মদ বনি আমিন, অভিযোগ শাখার প্রধান সহকারী আব্দুল হান্নান খান, প্রটোকল শাখার প্রধান সহকারী মো. তৈফুর রহমান, উচ্চমান সহকারী মো. নাসির উদ্দিন, অর্থ, হিসাব ও নিরীক্ষা শাখার বাজেট অফিসার ও সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. তাইজুল ইসলাম, ঊর্ধ্বতন হিসাবরক্ষক এস এম এস আজম সরকার, প্রশাসন ও অর্থ উইং প্রশাসন-১ শাখার প্রধান সহকারী মো. নাজমুল হুদা। চক্রের অনিয়মে সহায়তা করেন প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের ঊর্ধ্বতন হিসাবরক্ষক নাফিসা সরকার, মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী মো. দিদারুল আলম, উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইংয়ের উচ্চমান সহকারী মো. ফারুক হোসেন, সরেজমিন উইংয়ের সার অনুশাখার উচ্চমান সহকারী মো. শেখ ফরিদ, প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের ঊর্ধ্বতন হিসাবরক্ষক মো. হাবিবুর রহমান, উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের আমদানি শাখার উচ্চমান সহকারী মো. আমান উল্লাহ, উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের রপ্তানি শাখার ব্যক্তিগত সহকারী মো. লোকমান, পরিকল্পনা ও আইসিটি উইংয়ের (প্রেষণে হিসাব শাখা) প্রধান সহকারী মো. মোফাজ্জাল আমিন, সরেজমিন উইংয়ের বাজেট বরাদ্দ অনুশাখার প্রধান সহকারী মো. আবুবক্কর মাতুব্বর, প্রশাসন ও অর্থ উইংয়ের হিসাব অনুশাখার অডিটর মো. কামরুল ইসলাম ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইংয়ের হিসাব অনুশাখার উচ্চমান সহকারী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ৫ থেকে ২১ বছর অধিদপ্তরের একই দপ্তরে দিব্যি কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস নেই কারও। নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ-পদোন্নতি বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই সিন্ডিকেট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরে তদবির করে অতিরিক্ত উপপরিচালক (পিএস টু ডিজি) মো. মোজাক্কেরের মাধ্যমে। মোজাক্কের ২০১৩ সাল থেকে খামারবাড়ির আইসিটি শাখায় এবং ২০১৭ সাল থেকে মহাপরিচালকের দপ্তরে কর্মরত।
Advertisement