প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে মেকানিজম পরিবর্তন দরকার
মোহাম্মদ মজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি ইনস্টিটিউটের উপানুষ্ঠানিক ও অব্যাহত শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন। মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য লিখিত কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বইয়ের প্রধান লেখক তিনি। শিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। কমনওয়েলথ রিসার্চ ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মোহাম্মদ মজিবুর রহমানের জন্ম কুমিল্লায়।
সমকাল: প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত শিক্ষক, দুই কর্মকর্তার যোগসাজশও স্পষ্ট। শিক্ষা সচিবের প্রশ্নটি দিয়েই শুরু করি- 'কাকে বিশ্বাস করব'?
মোহাম্মদ মজিবুর রহমান: প্রথম কথা হলো, দিনাজপুর বোর্ডে যেভাবে প্রশ্ন ফাঁসের অঘটন ঘটেছে, সেটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণিত কাজ। কয়েক বছর এটি বন্ধ ছিল। এখন আবার সেটি আমরা দেখছি। সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, তাতে জড়িত শিক্ষক ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সে জন্যই শিক্ষা সচিবের অসহায় উচ্চারণ- 'কাকে বিশ্বাস করব'? কিন্তু আমার কথা হলো, বিশ্বাস করার মতো মানুষকে আমরা যথাস্থানে বসাচ্ছি কিনা? বর্তমানে আমরা যে চর্চা দেখছি, তাতে অনেক সময় যোগ্য বিকল্প থাকা সত্ত্বেও অযোগ্যরা চেয়ারে বসছে। যখন যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের দায়িত্বশীল পদে বসানো হয় তখন আক্ষেপ না করে সে মেকানিজমে পরিবর্তন আনা দরকার।
সমকাল: তাই বলে একজন শিক্ষক কেন প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘৃণিত কাজ করবেন?
মজিবুর রহমান: শিক্ষক কেন; কারও দ্বারাই প্রশ্ন ফাঁসের মতো কাজ সমর্থনযোগ্য নয়। এখানে শিক্ষকের ব্যক্তিগত সততা ও মূল্যবোধের জায়গা যে নষ্ট হয়ে গেছে- তা তো স্পষ্ট। একই সঙ্গে এটা বলা দরকার, বিষয়টিকে একেবারে ব্যক্তিগত জায়গা থেকে দেখার সুযোগ সামান্যই। দেখুন, শিক্ষক কিন্তু সমাজ থেকে আলাদা কেউ নন। সমাজে এখন টাকা না থাকলে মূল্যায়ন হয় না। আগে গ্রাম কিংবা শহরেও একজন সৎ কিন্তু দরিদ্র মানুষকে সবাই সম্মান করত। সে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। এখন শিক্ষককে তাঁর অর্থ না থাকার কারণেই তাচ্ছিল্য করা হয়। তার ওপর সামাজিক এমনকি পারিবারিক চাপের বিষয়ও অস্বীকার করা যাবে না। সে জন্য শিক্ষকদের কেউ কেউ অর্থ উপার্জনে অসৎ উপায় অবলম্বন করছেন।