কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

‘শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখুন’

বাংলা ট্রিবিউন প্রভাষ আমিন প্রকাশিত: ০৪ আগস্ট ২০২২, ১৭:১৮

রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামা নিয়ে হইচইয়ের কথা গত সপ্তাহে লিখেছিলাম। যারা গেলো গেলো রব তুলেছিলেন, বাংলাদেশ কবে শ্রীলঙ্কা হবে তার দিন গুনছিলেন; তাদের জন্য কিছু দুঃসংবাদ আছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিম্নমুখী প্রবণতা থেমেছে। এখন আবার রিজার্ভ বাড়ছে। দুই বছর পর গত ১২ জুলাই রিজার্ভ প্রথম ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছিল। নামতে নামতে ২৭ জুলাই ৩৯ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। তারপর থেকেই রিজার্ভ ঘুরতে শুরু করে। ৩ আগস্ট রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে ভেবে যেসব শকুনেরা অপেক্ষায় ছিলেন, তাদের জন্য আরও দুঃসংবাদ আছে। জুলাই মাসে বাংলাদেশের রিজার্ভের মূল দুই উৎস রফতানি এবং রেমিট্যান্স লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এবং আমদানিও কমেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিজার্ভ আবার ৪০ বিলিয়ন ডলারের মনস্তাত্ত্বিক সীমা অতিক্রম করবে। তাদের জন্য দুঃসংবাদ আছে আরও। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সহনীয় হয়ে আসছে। এরইমধ্যে কমতে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। কমছে খাদ্যপণ্যের দামও। যুদ্ধের মধ্যেও রাশিয়া-ইউক্রেন খাদ্যপণ্য রফতানিতে একমত হয়েছে এবং সেটা শুরুও হয়েছে। বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতিও কমে আসছে। শেয়ার বাজারে যে আতঙ্ক নেমেছিল, কেটে গেছে সেই অনাস্থাও। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতেই স্বস্তি ফিরে আসবে।


বাংলাদেশের কোনও গণমাধ্যম সরকার বা সরকার প্রধানের সাফল্যের কথা বললে, একটি পক্ষ ‘দালাল, দালাল’ বলে স্লোগান তোলে। কিন্তু গত এক মাসে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার পতন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশের তালিকা করেছে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা। তার কোনোটিতেই বাংলাদেশের নাম নেই। বরং বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন অনেকে। যারা বাংলাদেশ বা অন্য কোনও দেশ বা গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে আস্থা  রাখতে চাইবেন না, তাদের জন্য এবার রয়েছে পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞদের আস্থা।  গত ২ আগস্ট ‘টেক অ্যাওয়ে ফ্রম বাংলাদেশ’স লিডারশিপ’ পাকিস্তানের পত্রিকা ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। নিবন্ধটির লেখক সাহেবজাদা রিয়াজ নূর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সাবেক মুখ্য সচিব।


কথার কথা নয়, রিয়াজ নূর রীতিমতো পরিসংখ্যান দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের তুলনা করেছেন এবং শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে বলেছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের পরিসংখ্যানগত তুলনা করে রিয়াজ নূর লিখেছেন, ‘বিরোধীদের বলপূর্বক নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ থাকলেও ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে টেকসই প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের তুলনায় ১৯৭০ সালে দেশটি ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ছিল, কিন্তু এখন পাকিস্তানের চেয়ে ৪৫ শতাংশ ধনী। পাকিস্তানের তুলনায় ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ অংশে জনসংখ্যা ১ কোটি বেশি ছিল। আর এখন পাকিস্তানের ২৩ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ।


২০২১ সালে বাংলাদেশের রফতানি ৪৭ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের ২৮ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের ১ হাজার ৫৪৩ ডলারের তুলনায় বাংলাদেশে এখন মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার। ২০২২ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ৪১১ বিলিয়ন, পাকিস্তানে তা ৩৪৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশ, পাকিস্তানে আগে যা ছিল ১২-১৫ শতাংশ। পাকিস্তানে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ২১ শতাংশ হয়েছে। ভবিষ্যতে এই হার আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া, পাকিস্তানি রুপির তুলনায় বাংলাদেশি টাকা অনেক শক্তিশালী। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অধিক হারে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সাক্ষরতার হার অনেক বেশি’।


তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই উন্নয়নের কৃতিত্ব দেশটির নেতৃত্বকে দেওয়া যেতে পারে।’ রিয়াজ নূর লিখেছেন, ‘পাকিস্তানের নেতৃত্ব বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে। তবে প্রধান পদক্ষেপটি হওয়া উচিত—অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতি শেখ হাসিনার অগ্রাধিকারের বিষয়টি অনুসরণ করা, যা প্রতিরক্ষা এবং গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।’ বাংলাদেশকে যারা শ্রীলঙ্কা বানাতে চান, তারা এখন কী বলবেন? শুধু বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তানেও দেখি শেখ হাসিনার দালালে ভর্তি হয়ে গেছে।


২০১৮ সালে ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর এক টকশোতে পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী জাইঘাম খানের সেই ঐতিহাসিক আক্ষেপের কথা নিশ্চয়ই আপনারা ভুলে যাননি। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ইমরান খান উন্নয়নে সুইডেন মডেল অনুসরণ করার কথা বলেছিলেন, জবাবে জাইঘাম খান আকুতি জানিয়েছিলেন, ‘সুইডেন নাহি, খোদা কি ওয়াস্তে হামে বাংলাদেশ বানা দো।’ কিন্তু জাইঘাম খানের সেই আকুতি কানে তোলেনি পাকিস্তান সরকার। সুইডেন তো অনেক দূরের পথ, পাকিস্তানকে শ্রীলঙ্কার মতো ভঙ্গুর অবস্থায় রেখে বিদায় নিতে হয়েছে ইমরান খানকে। জাইঘাম খানের পরামর্শ কানে তোলেনি পাকিস্তান সরকার। এখন নতুন সরকার কি রিয়াজ নূরের লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়বে এবং শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে পারবেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও