কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ইউক্রেন যুদ্ধ: পশ্চিমা মিডিয়ার মিথ্যার মুখোশ খুলে দিচ্ছেন যাঁরা

প্রথম আলো ইউক্রেন মনজুরুল হক প্রকাশিত: ০১ আগস্ট ২০২২, ০৯:০৭

যুদ্ধের প্রথম শিকার হচ্ছে সত্য। যুদ্ধে লিপ্ত বিভিন্ন পক্ষ এবং তাদের সাঙাতেরা যুদ্ধের ময়দানে অস্ত্র নিয়ে লড়াই করার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব যার ওপর আরোপ করে থাকে, তা হলো সত্যকে বধ করা। কেননা, তা করতে পারলে যুদ্ধের ময়দানে ক্রমাগত পশ্চাদপসারণকেও নিজেদের নাগরিক আর অনুসারীদের সামনে বিজয় হিসেবে তুলে ধরা সম্ভব হবে না এবং নিশ্চিত পরাজয় ত্বরান্বিত হবে।


ঠিক এমনটাই এখন ঘটে চলেছে ইউক্রেনের যুদ্ধের ময়দানে, বিভ্রান্ত এক পক্ষ যেখানে সত্যকে মাটিচাপা দিয়ে রাখতে এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে দিনকে রাত বলে তুলে ধরতেও দ্বিধা করছে না তারা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক আচরণ অবশ্যই এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত। গত এক সপ্তাহে নিজ দলের বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকেই ভলোদিমির জেলেনস্কি কেবল চাকরিচ্যুত করেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও তিনি উত্থাপন করছেন।


ইউক্রেনের এই বাস্তবতা আমাদের জার্মানিতে হিটলারের শেষ বছরটির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, রাইখ ফ্যুরোর যখন চারদিকে শত্রুর উপস্থিতি দেখতে পেয়ে সবাইকে দোষারোপ করে চলছিলেন। যুদ্ধের মোড় নাটকীয়ভাবে ঘুরে গেলে সমরনায়কদের অবস্থা ঠিক সে রকম হয়ে দাঁড়ায়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকেও এখন দেখা যাচ্ছে সেই একই পথে হাঁটতে। ফলে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় না গিয়ে এখন দেখা যাক বাক্‌স্বাধীনতা এবং মতামত প্রকাশের অধিকারের সবচেয়ে বড় রক্ষক হিসেবে দাবি করা পশ্চিম এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কী করছে নিজের দেশের নাগরিকদের নিয়ে। কেননা, জেলেনস্কির মতোই পশ্চিমের অনেক দেশও এখন বাস্তবতা আঁচ করতে পারার বিভ্রান্তি থেকে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করেছে, ডুবন্ত মানুষের বিলাপের সঙ্গে সেটাকে সহজেই তুলনা করা যায়।


আলিনা লিপ হচ্ছেন জার্মানির একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক। ইউক্রেনের দনবাসে অবস্থান করে সেখানকার পরিস্থিতি–সংক্রান্ত প্রতিবেদন জার্মানিসহ অন্য কয়েকটি দেশের মূলধারার বাইরের কিছু সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা ছাড়াও নিজের ইউটিউব চ্যানেলেও তা তিনি সংযুক্ত করছেন। ‘মূলধারার বাইরে’র সংবাদমাধ্যম বাক্যটির ওপর এ কারণে আমি গুরুত্ব আরোপ করতে চাই যে, ইউক্রেনের যুদ্ধ আমাদের অনেকের চোখে ‘দেবতা’ হিসেবে গণ্য মূলধারার সংবাদমাধ্যমের আসল চেহারা উন্মোচন করে দিয়ে রীতিমতো নগ্ন অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ইউক্রেন নিয়ে শুরু থেকে সব রকম বানোয়াট প্রচার ও সংবাদ পরিবেশন করার মধ্যে দিয়ে তারা সবাই দেখিয়ে দিয়েছে যে, স্বার্থের সংঘাত দেখা দেওয়ার সময় গুণগত সব রকম পার্থক্য তাদের মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। আর এই মূলধারার সংবাদমাধ্যমের বস্ত্রহরণ করার মতো সাহসী ভূমিকা যাঁরা রেখে যাচ্ছেন, আলিনা লিপ হলেন সেই মুষ্টিমেয়দের দলের একজন।


অন্যদিকে গ্রাহাম ফিলিপস হলেন ব্রিটিশ নাগরিক, ইউক্রেনের মারিউপোল থেকে যিনি নিয়মিতভাবে যুদ্ধের বাস্তব অবস্থার সচিত্র প্রতিবেদন ইউটিউবে সংযুক্ত করা ছাড়াও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও প্রচার করছেন। এখন তিনি অবস্থান করছেন দনবাসে এবং সেখান থেকে জানাচ্ছেন দনবাসের স্থানীয় লোকজন কীভাবে দেখছেন যুদ্ধকে। গ্রাহাম এবং আলিনা—দুজনেই শীতল কক্ষের আরামকেদারায় বসে থেকে গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহ করে যাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রচারের দায়িত্ব পালন করে যাওয়া সাংবাদিক নন; বরং তাঁরা হলেন সেই সাংবাদিক, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সেখানে সত্যিকার অর্থে কী ঘটে চলেছে সেই বার্তা যাঁরা পৌঁছে দিচ্ছেন নিজেদের ভক্ত আর অনুসারীদের কাছে। বিনিময়ে বড় অঙ্কের কোনো রকম অর্থপ্রাপ্তি তাঁদের কপালে অবশ্যই জুটছে না, বরং যা তাঁরা পাচ্ছেন তা হলো, নিজ নিজ দেশের যুদ্ধবাজ সরকার আর প্রশাসনের তিরস্কার।


জার্মানির একটি আদালত সম্প্রতি আলিনা লিপকে রাষ্ট্রদ্রোহী ঘোষণা করে তার সব রকম সম্পদ জব্দের ঘোষণা দিয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার দোহাই দিয়ে আমাদের মতো দেশে নিজেদের পোষ্য তৈরি করে নেওয়ার খেলায় দুই হাতে অর্থ বিলিয়ে যাওয়া দেশটি নিজের দেশের একজন সত্যভাষী নাগরিকের কণ্ঠ রোধ করতে এমন কোনো পদক্ষেপ নেই, যা কাজে লাগাচ্ছে না। আলিনার অনুপস্থিত বিচার যেভাবে করা হয়, ইংরেজি ভাষায় সেই প্রক্রিয়ার একটি নামকরণ করা আছে—‘স্টার চেম্বারের’ রায়। অভিযুক্ত ব্যক্তির কথা বলা কিংবা আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ সেখানে নেই এবং অভিযোগ, বিচার ও রায়—সবই হচ্ছে একতরফা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও