এমপি-মেয়র দ্বন্দ্বে থমকে আছে দিনাজপুর

প্রথম আলো দিনাজপুর সোহরাব হাসান প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২২, ১৬:৫২

বাংলাদেশের যেকোনো শহরের সঙ্গে আশপাশের এলাকার পার্থক্যটি বোঝা যায় সড়ক দেখে। পৌর এলাকার বাইরের সড়ক যতই খারাপ থাকুক, শহরের ভেতরের সড়কগুলো থাকে ঝকঝকে। কিন্তু উত্তরের অন্যতম প্রধান শহর দিনাজপুরের চিত্র এর বিপরীত। সৈয়দপুর থেকে দিনাজপুর শহর অবধি সড়কটি বেশ ভালো। শহরের ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল বেশির ভাগ সড়ক খানাখন্দে ভরা। দুই পাশে ময়লা-আবর্জনা।


গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত একটি কর্মশালায় যোগ দিতে ২২ জুলাই দিনাজপুর যাই। মাসব্যাপী এই কর্মশালার অংশীজনদের বেশির ভাগ ছিলেন প্রধানত স্কুল-কলেজের শিক্ষক। তাঁরা যাতে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারেন, সে জন্যই এ কর্মশালার আয়োজন।


আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল সার্কিট হাউসে। পাশেই ব্রিটিশ আমলে তৈরি গোর-এ-শহীদ ময়দান। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতে ময়দানের দেয়ালজুড়ে চলছিল আলোকসজ্জা। একদিকে লোডশেডিং, অন্যদিকে আলোকসজ্জা। মনে হলো দেখার কেউ নেই।


দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আয়োজিত কর্মশালা শেষে প্রথম আলোর দিনাজপুর অফিসে গিয়ে দেখি বন্ধুসভার বন্ধুরা অপেক্ষা করছেন। সহকর্মী রাজিউল ইসলাম ওরফে শৈশব রাজু আগেই ব্যবস্থা করেছিলেন। দিনাজপুর বন্ধুসভার সদস্যরা খুবই সক্রিয়। তাঁরা নিয়মিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন, করোনার সময় মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন। পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে গেছেন। প্রথম দিকে অনলাইনে ক্লাস করতে কিছুটা অসুবিধা হলেও পরে সবাই মানিয়ে নিয়েছেন। শিক্ষকেরাও সহায়তা করেছেন। দিনাজপুরের শিক্ষার্থীদের বড় অংশ শহরের বাইরে থেকে আসা। অনেকেই মেসে থেকে পড়াশোনা করেন। মেসেই প্রথম আলো পত্রিকা রেখে পড়েন। তাঁরাই তো প্রথম আলোর প্রকৃত বন্ধু।


প্রথম আলোর অফিসেই কথা হয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বাম দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে। কথা হয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের সঙ্গেও।


জানতে চাইলাম, দিনাজপুরের সমস্যা কী? তাঁরা বলেন, প্রথম সমস্যা ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট। দ্বিতীয় সমস্যা অনিয়ন্ত্রিত ইজিবাইক। বাস টার্মিনালগুলো অপরিচ্ছন্ন। কয়েক কিলোমিটার দূরে হিলি সীমান্ত। সেখান থেকে মাদক আসে। তরুণদের একাংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নিষ্ক্রিয়। শিশু–কিশোর সংগঠনেরও কোনো তৎপরতা নেই। দিনাজপুরে প্রচুর শস্য, ফল ও সবজি চাষ হয়। কিন্তু কোনো কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে ওঠেনি। সেতাবগঞ্জ চিনিকল ও দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলও বন্ধ হয়ে গেছে। কারখানা বন্ধের মধ্যেই সরকার সমাধান খুঁজছে। লাভজনক করে চালানোর চেষ্টা করছে না।


১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দিনাজপুর পৌরসভার রাস্তাঘাটের এই দুরবস্থা কেন? উত্তরে তাঁরা যা বললেন, তার সারকথা হলো, সদরের এমপি ও হুইপ ইকবালুর রহিম ও পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের দ্বন্দ্বের কারণে দিনাজপুরের সবকিছু থমকে আছে। কোনো উন্নয়নকাজ হচ্ছে না। নাগরিকদের কল্যাণে নতুন প্রকল্প দূরে থাক, রুটিন কাজগুলোও করা যাচ্ছে না অর্থের অভাবে। দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র বিএনপির। সরকার আওয়ামী লীগের। কাউন্সিলরদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের। এ কারণে মাঝেমধ্যে পৌরসভার কাজকর্মে অচলাবস্থা দেখা দেয়। রাস্তাঘাটে খানাখন্দ থাকলেও মোড়ে মোড়ে হুইপের ছবি–সংবলিত পোস্টার ও ফলক শোভা পাচ্ছে।


তাদের কাছ থেকেই জানলাম, গত ১৫ জুন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মেয়রকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কাজে অদক্ষতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মসহ ৯টি অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগ সব মেয়রের বিরুদ্ধেই কমবেশি আছে। তাই বলে তাঁরা বরখাস্ত হন না। বরখাস্ত হন বিরোধী দলের মেয়ররা। উচ্চ আদালতে রিট করে সৈয়দ জাহাঙ্গীর এ যাত্রা রক্ষা পেয়েছেন। এর আগেও দুবার তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সরকার অযোগ্যতার অভিযোগ এনে সৈয়দ জাহাঙ্গীরকে বরখাস্ত করে আর জনগণ তাঁকে তিন–তিনবার বিপুল ভোটে মেয়র করেছেন। রহস্যটা কী?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও