পাটকল ইজারা দিয়ে কী সুফল মিলবে?

যুগান্তর মুঈদ রহমান প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৫

সরকারের সাম্প্রতিক একটি সিদ্ধান্ত পুরোনো একটি প্রসঙ্গ নতুন করে আলোচনার সুযোগ তৈরি করেছে। প্রসঙ্গটি পাটকল নিয়ে। পাট বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি অতিপরিচিত পণ্য। পাকিস্তান আমলে তো বটেই, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দশকেও পাট ছিল আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য। আশির দশক থেকে পোশাক রপ্তানি পাটের জায়গা দখল করে। বর্তমানে মোট রপ্তানির প্রায় ৭৭ শতাংশ পোশাক খাতের অবদান আর পাটের অংশ সেখানে ২ শতাংশের বেশি নয়। পাট উৎপাদনে চাষিদের আগ্রহ দিনকে দিন কমে যাচ্ছে। প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ার কারণেই এমনটি হচ্ছে।


তাছাড়া কৃষকের ব্যবহারের পাটবীজের গুণগত মান এবং সময়মতো পাওয়ার ক্ষেত্রে সংশয় কাজ করে। কারণ আমাদের পাটবীজের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ আসে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে। প্রতিবছর গড়ে ৪ হাজার ৫০০ টন বীজ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। অবশ্য এ আমদানিনির্ভরতা কমানোর চেষ্টা চলছে। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৫-২৬ সাল নাগাদ দেশেই প্রায় ৫ হাজার টন উন্নত মানের পাটবীজ উৎপাদন করা হবে।


কিছু সমস্যা থাকার পরও সাম্প্রতিক সময়ের তথ্যমতে, ২০২১ অর্থবছরে পাট রপ্তানির প্রবৃদ্ধি গত ১২ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। উল্লিখিত বছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩১ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ থেকে ২৮২টি পাটজাত পণ্য ১৩৫টি দেশে রপ্তানি করা হয়। ২০২১ সালে পাটের রপ্তানি আয়ের রেকর্ড ভাঙার বিপরীতে দেশের পাটের উৎপাদন বছর বছর কমতির দিকে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে উৎপাদিত মোট পাটের পরিমাণ ছিল ৮৬ লাখ টন। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯-২০ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৮০ লাখ টনে। ২০২০-২১ সালে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮২ লাখ টন নির্ধারণ করা হলেও প্রকৃত উৎপাদন ছিল মাত্র ৭৪ লাখ টন।


পাটশিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গেল অর্থবছরে পাট রপ্তানি থেকে রেকর্ড পরিমাণ আয়ের কারণ রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সুবাদে অর্থের অঙ্ক বড় হয়েছে। আর দাম বৃদ্ধির কারণ হলো পরিবহণ খরচ বৃদ্ধি। করোনাপূর্ব ১০০ টাকার জাহাজ ভাড়া এখন ৬০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এখানে উৎপাদনকারীর কোনো অতিরিক্ত আর্থিক অর্জন নেই। তারপরও আমাদের দেশের পাটশিল্প নিয়ে সাধারণ মানুষের একটা আগ্রহ থেকেই যায়। কারণ প্রায় আড়াই কোটি মানুষ এর উৎপাদন, অভ্যন্তরীণ বাজার, ব্যবসা ও মেনুফ্যাকচারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। তাছাড়া সার্বিক অর্থে পাট একটি পরিবেশবান্ধব পণ্য।


১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে পাকিস্তানের এ অংশের বেশিরভাগ (লুম শক্তির বিচারে প্রায় ৭০ শতাংশ) জুট মিলের মালিক ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি অবাঙালি। যুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে জুট মিলগুলো পরিত্যক্ত অবস্থার মধ্যে পড়ে। সে সময় নবগঠিত বাংলাদেশ সরকার মিলগুলোকে আবার চালু রাখার উদ্দেশ্যে জাতীয়করণ বা রাষ্ট্রীয়করণ করে। এ মিলগুলো পরিচালনা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি)। করপোরেশনের অধীনে ছিল ৭৩টি মিল, যেখানে তাত বা লুমের সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ৮৩৬। শুরুতেই সংস্থাটি আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। প্রধান রপ্তানি পণ্যটির উৎপাদন বজায় রাখতে প্রথম দুই বছর সরকারের পক্ষ থেকে বার্ষিক ২০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হতো। ১৯৭৬-৭৭ সালে ভর্তুকি কমিয়ে ১০ কোটি টাকায় নামানো হয়। ১৯৭৯-৮০ সালে ভর্তুকি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হলেও এ শিল্পটি লাভজনক ছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও