হাওর- কারও শখ কারও সর্বনাশ ‘বড় দেরিতে তুমি বুঝলে...’
হাওরের ফসল নিয়ে মানুষের শঙ্কা আশঙ্কা যখন তুঙ্গে। হা-হুতাশে হাবুডুবু খেতে খেতে গলা পানিতে নেমে যখন দিনরাত বাঁধ রক্ষার কাজ করছে সাধারণ কৃষক। চোখের জল ফেলতে ফেলতে কাঁচা ধান কাটছে তখন ঘোষণা এলো শখের সড়ক আর হবে না হাওরে। দরকারে হবে উড়ালসড়ক। সোমবার (১৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। সে সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খুব খোলাসা করেই বলেন, ‘আজ ক্লিয়ার ইন্সট্রাকশন দেওয়া হয়েছে যে, হাওর এলাকায় কোনো রাস্তাঘাট এখন থেকে আর করা যাবে না। যদি কিছু করতেই হয় সেটা এলিভেটেড (উড়াল) করতে হবে, যাতে করে পানি চলাচলে বাধা না আসে।’ অনেক শখ-আহ্লাদের আবুরা সড়কের বিরূপ প্রভাব নিয়ে যে নীতিনির্ধারক মহল অস্বস্তিতে আছেন সেটা এখন ঢাকার যানজটে বসেও অনুভব করা যায়। সচিব শুধু ভবিষ্যতের উড়াল রাস্তার সিদ্ধান্ত জানাননি, তিনি বর্তমান রাস্তার সংস্কারের কথাও বলেছেন। জানিয়েছেন পানিপ্রবাহের সুবিধার্থে বিদ্যমান রাস্তাগুলোতে আরও ব্রিজ নির্মাণ করা যায় কিনা সে বিষয়ে সার্ভে করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রোডস অ্যান্ড হাইওয়েকে বলা হয়েছে, প্রতি আধাকিলোমিটার পরপর দেড়শ থেকে দু’শ মিটার ব্রিজ করে দেওয়া যায় কিনা তা সমীক্ষা করার জন্য।
হাওরে এবার পানি নামতে সময় লেগেছে অনেক ফলে শুকনা মাটি সময়মতো মেলেনি বাঁধ বাঁধার জন্য। মাটিতে জো আসতে আসতে ধান লাগানোর সময় পার হয়ে যায় যায় অবস্থায় হয়েছিল নাবি জমিতে। হাওরের মূলত দুটি অংশ। একটি মূল জলাশয়, যার পানি বছরের সব সময় থাকে। টাঙ্গুয়ার হাওরে বা হাকালুকি হাওরে শুষ্ক মৌসুমে (শীতকালে) এ জলাশয় দেখা যায়। দ্বিতীয় অংশটি হলো ছয় মাস পানির নিচে থাকে, অর্থাৎ বছরের ছয় মাস শুকনো থাকে। মূলত এ জমিগুলো কৃষিজমি। বছরের ছয় মাস এখানে ধান, পাটসহ বিভিন্ন কৃষি ফসল উৎপাদন করেন কৃষকরা। বৃষ্টিপাতের মৌসুমের তারতম্য হলে বা পানি নামতে উনিশ-বিশ হলে এ কৃষি বিপন্ন হয়, বড় ঝুঁকিতে চলে যায় মানুষের জীবন জীবিকা।