সরকারি আয়ের যৌক্তিক উৎস বাড়াতে হবে
আমরা সামন্তযুগ পার করে গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় বিচরণ করছি। রাজকোষের মালিক এখন কোনো রাজা নন, বরং জনগণের কাছ থেকে আহরিত টাকা দিয়ে গড়ে তোলা রাজকোষের প্রকৃত মালিক জনগণ। তবে তা পরিচালনা করার জন্য থাকে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠন করা একটি সরকার। বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের একই রীতি। সরকারই নির্ধারণ করে কোথা থেকে আয় করে কোথায় ব্যয় করা হবে। এই আয়-ব্যয়ের হিসাবকে বাজেট বলে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক পর্যায়েও বাজেট থাকে। তবে পারিবারিক বাজেটের সঙ্গে সরকারি বাজেটের একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। পারিবারিক বাজেটে কতটা ব্যয় করা হবে, তা নির্ভর করে আয়ের ওপর। আর সরকারি বাজেটে প্রথমে নির্ধারণ করা হয় কতটা ব্যয় করা হবে, আয়ের কথা পরে।
সরকার আয় করে কোথা থেকে? সরকারি আয়ের একটি বড় উৎস হলো আয়কর। এটাকে আমরা প্রত্যক্ষ কর বলি। প্রত্যেক সাধারণ মানুষ বছরে যে পরিমাণ আয় করেন, তার একটি অংশ সরকারকে কর হিসাবে দিতে হয়। তবে গেল বাজেটে বলা হয়েছে, যেসব পুরুষ বছরে ৩ লাখ টাকা বা তার নিচে আয় করবেন, তাদের কর দিতে হবে না; নারীর ক্ষেত্রে এটা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এর বেশি আয় করলে বাড়তি আয়ের ওপর কর দিতে হবে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য আয়ের উৎস হলো মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। এটিকে আমরা পরোক্ষ কর বলি। দেশে উৎপাদিত ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোগ করা পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ কর দিতে হয়, যা মূল্য সংযোজন কর নামে পরিচিত। এর বাইরে সরকারের আরও আয়ের উৎস আছে। তার মধ্যে আছে আবগারি শুল্ক, বাণিজ্য শুল্ক, ভূমি রাজস্ব, রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প, বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা, সেবা খাত থেকে আয়, রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লভ্যাংশ, ডাক ও টেলিফোন বিভাগ থেকে আয়, তিনটি সমুদ্রবন্দর থেকে প্রাপ্ত আয় প্রভৃতি।