করোনা দ্রুত রূপ বদলায় কেন, জনস্বাস্থ্যে এর প্রভাব কী?

ঢাকা পোষ্ট ড. মো. আজিজুর রহমান প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২৫, ১৩:৩৮

কোভিড-১৯ যে প্রকারের করোনাভাইরাস দিয়ে হয় তার অফিশিয়াল নাম সার্স-কোভ-২ (SARS-CoV-2)। ভাইরাসটি চীনের উহান শহরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম শনাক্ত হয় এবং খুব দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এটি প্রথমে ‘উহান করোনাভাইরাস’ এবং পরে ‘2019-nCoV’ নামে পরিচিতি পেলেও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে একে ‘সার্স-কোভ-২ (SARS-CoV-2)’ হিসেবে এবং এ ভাইরাসঘটিত রোগের নাম ‘কোভিড-১৯’ হিসেবে নামকরণ করে।


তবে, সাধারণ মানুষের বোঝার সুবিধার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটি সার্স-কোভ-২-এর বদলে ‘কোভিড-১৯ ভাইরাস’ এবং অনেক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া  আরও সহজ করে ‘করোনাভাইরাস’ অথবা আরও সহজ করে ‘করোনা’ নামটিই বেশি ব্যবহার করে। আর সাধারণ মানুষ ‘করোনা’ বলতে কোভিড-১৯ কেও বোঝায়।


অন্যান্য অনেক ভাইরাসের মতো এ ভাইরাসও রূপ বদলাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উপধরন। আজকের এ লেখায় কোভিড-১৯ ভাইরাসের রূপ বদলের কারণ, নতুন উপধরনের বৈশিষ্ট্য ও এর প্রভাব নিয়ে আলোকপাত করব।


কোভিড-১৯ ভাইরাসসহ সব করোনাভাইরাস একধরনের আরএনএ (RNA) ভাইরাস। এই অতিক্ষুদ্র ভাইরাসটির জিনোমের আকার খুব ক্ষুদ্র এবং জিনোমে মাত্র ৩০ হাজার নিউক্লিওটাইড থাকে যেগুলো সবমিলিয়ে ১০-১৪ টি জিনের তথ্য বহন করে। ব্যাকটেরিয়ার জিনোমের সাথে তুলনা করলে এর ক্ষুদ্রতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। উদাহরণস্বরূপ, E. coli ব্যাকটেরিয়ায় নিউক্লিওটাইডের জোড়ার সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ এবং এর মধ্যে প্রায় ৪,৪০০ জিন থাকে।


প্রশ্ন হলো, কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোমে কেন এত পরিবর্তন হয়? এর কারণ নিহিত রয়েছে এর জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের ওপর। কোভিড-১৯ ভাইরাসের কপি তৈরি করে RNA Polymerase নামে এক ধরনের এনজাইম। এ এনজাইমটির প্রুফ রিডিং ক্ষমতা দুর্বল অর্থাৎ, এটি RNA-এর কপি তৈরি করার সময় কোন ভুল করে থাকলে সেটি সংশোধন করতে তেমন সক্ষম নয়। যদিও এতে nsp14 exonuclease নামে আরেকটি প্রুফ রিডিং এনজাইম থাকে, কিন্তু সেটিরও কার্যক্ষমতা তেমন ভালো নয়।



অবশ্য, প্রুফ রিডিংয়ে ভুল থাকার কারণ হিসেবে ভাইরাসটির দ্রুত কপি তৈরি করার সক্ষমতাকেও দায়ী করা যেতে পারে। করোনাভাইরাস মানবদেহে বা অন্য কোনো উপযুক্ত জীবদেহে যেমন- বাঁদুরের দেহকোষে প্রবেশের পর প্রতিদিন লাখ লাখ কপি বা প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে। RNA Polymerase যখন RNA-এর কপি তৈরি করে তখন এটি ভুল করে এক নিউক্লিওটাইডের পরিবর্তে আরেক নিউক্লিওটাইড বসিয়ে ফেলে যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘মিউটেশন’ (mutation) বলে। দ্রুত কাজ করলে মানুষের যেমন কাজে ভুল থাকার সম্ভাবনা থাকে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও তাই হয়। তাই, করোনার নতুন বংশধর অনেক সময় প্যারেন্টের থেকে কিছুটা আলাদা হয়ে থাকে।


তবে, করোনাভাইরাসের এরকম পরিবর্তিত প্রতিলিপি বা কপি পরে সফলভাবে টিকে থাকবে কিনা তা নির্ভর করে ভাইরাসের জিনোমে কী ধরনের মিউটেশন বা পরিবর্তন হয়েছে তার ওপর। এখানেও প্রাকৃতিক নির্বাচন বা ন্যাচারাল সিলেকশনের থিওরি কাজ করে। যে মিউটেশনগুলো ভাইরাসকে কোনো সুবিধা দেয় যেমন- টিকে থাকতে বা ছড়াতে সাহায্য করে, সেগুলো বিস্তার করে, আর বাকিগুলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়।


মিউটেশনের ফলে তৈরি করোনার নতুন নতুন উপধরন তৈরির পেছনে আরেকটি কারণ হলো এর দ্রুত বিস্তার ও সংক্রমণের ক্ষমতা। ভাইরাসের কপি তৈরি হতে যেহেতু উপযুক্ত জীবকোষের প্রয়োজন হয়, তাই এটি যত বিস্তারের সুযোগ পাবে তত বেশি মিউটেশন ঘটবে এবং নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হবে।


অনেক সময় এক দেহকোষে দুটি ভিন্ন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ হলে, তাদের মধ্যে জেনেটিক রিকম্বিনেশনের সুযোগ তৈরি হয়। এর ফলেও তৈরি হয় নতুন ভেরিয়েন্ট বা উপধরন যেগুলো রিকম্বিন্যান্ট ভেরিয়েন্ট বলা হয়। করোনার NB.1.8.1 ভেরিয়েন্টটি (ডাকনাম "নিম্বাস") এ ধরনের একটি রিকম্বিন্যান্ট ভেরিয়েন্ট যেটি যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশে অনেক দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে ২২টি দেশে এ উপধরনটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। 


তবে, জিনোমে অল্প পরিবর্তন হলেই সেটাকে উপধরনের মর্যাদা দেওয়া হয় না। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা শুধুমাত্র সে সব পরিবর্তিত প্রতিলিপিকে উপধরনের মর্যাদা দেয় যেগুলো তাদের পূর্ববর্তী জেনারেশন থেকে বেশ আলাদা বৈশিষ্ট্য অর্জন করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও