ইসি গঠনে ঐকমত্য কতটা, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মূল কাজ হচ্ছে দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা। আর এ কাজে ইসির বড় অংশীজন রাজনৈতিক দল। এ জন্য ইসি গঠনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ করা একধরনের রীতিতে পরিণত হয়েছে। ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোকে সরাসরি সম্পৃক্ত করতে তাদের কাছ থেকে সম্ভাব্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য কমিশনারদের নামের তালিকাও নিচ্ছে অনুসন্ধান কমিটি। তবে ২০১৭ সালের সঙ্গে তুলনা করলে এবার ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ কমেছে। বিশেষ করে বিরোধী দলগুলো এবার রাষ্ট্রপতির সংলাপ এবং অনুসন্ধান কমিটিতে নাম দেওয়ার প্রক্রিয়া বর্জন করেছে।
বর্তমানে জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ভোট হচ্ছে দলীয় প্রতীকে। অর্থাৎ এখন আর দলনিরপেক্ষ নির্বাচন খুব একটা হচ্ছে না। ফলে ভোটের আগে-পরের পরিবেশ নিয়ে ইসির প্রতিটি পদক্ষেপ রাজনৈতিক দলগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করে। ভালো হলে বাহবা দেয়, খারাপ হলে সমালোচনা করে।
সারা বিশ্বেই ইসি গঠনে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার একটা চেষ্টা থাকে। এবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নিয়ে বেশির ভাগ দল রাজনৈতিক ঐকমত্যের কথা বলেছে। ইসি গঠনের আইন পাসের সময় সংসদে বিরোধী দলগুলো এবং বাইরে নাগরিক সমাজও একই পরামর্শ দিয়ে আসছে। কিন্তু ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ কমে যাওয়ার কারণে সেই ঐকমত্য কতটা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলো নতুন ইসিকে কতটা গ্রহণ করবে, ইসি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা কীভাবে অর্জন করবে—এ আলোচনা আগামী দিনগুলোতে আরও জোর পাবে।
এবার নতুন আইনের ভিত্তিতে ইসি গঠন হচ্ছে। ২০১৭ সালে বর্তমান ইসি গঠনের সময় আইন ছিল না। এখন প্রশ্ন হলো আগেরবারের তুলনায় এবার প্রক্রিয়াগত বড় কোনো পার্থক্য এসেছে? এখন পর্যন্ত বড় পরিবর্তন দেখা যায়নি।