অপরিকল্পিত উচ্চশিক্ষা: পরিণতি কী?
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আগাগোড়াই বেড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। কোন স্তরে কত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন, কেমন মান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বজায় রাখতে হয়, কী ধরনের শিক্ষা জাতির জন্য অপরিহার্য, আবার কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতিকে কিছুই দিতে সক্ষম নয়—এর কোনো জবাব কিংবা সঠিক ধারণা দেশে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু দেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, উচ্চশিক্ষা তথা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার কোনো অভাব নেই। অধিকন্তু বলা চলে সব স্তরেই প্রয়োজনের চেয়ে ঢের বেশিসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ কারণে ছাত্র ভর্তি করিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাঁচিয়ে রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা করতে অনেকেই টিভি ও পত্রপত্রিকায় ‘ভর্তির অপূর্ব সুযোগ রয়েছে’—এমন বিজ্ঞাপন দিয়েই যাচ্ছে। গ্রামগঞ্জের নানা নামের ও ধরনের মাদ্রাসা, কেজি স্কুল, ক্যাডেট নামধারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র ভিক্ষা করে চলছে। আসলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগেরই কোনো অনুমোদন নেই।
যে যার মতো প্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষক পরিচয়ে নিজের বেকারত্ব ঘোচাচ্ছেন, কিংবা আয়-উপার্জন করছেন। সত্যিকার শিক্ষা দেওয়ার কোনো স্বীকৃত প্রশিক্ষণ, শিক্ষার মানদণ্ড দেওয়ার যোগ্যতা এই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের রয়েছে কি না, তা বলা মুশকিল। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চতর মাদ্রাসা নিয়েও এমন অবস্থা বিরাজ করছে বললে আঁতকে উঠবেন না তো? একটু খবর নিলে জানতে পারবেন তাদের উচ্চশিক্ষা দিচ্ছে এমন সরকারি, বেসরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার সংখ্যা যেমন আপনাকে চমকে দেবে, একইভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর হার, মান এবং ‘উচ্চশিক্ষার’ বিচিত্র রূপ দেখে আপনি যদি নিজেকে ধরে না রাখতে পারেন, তাহলে বোধ হয় এই বাস্তব অবস্থা না শোনাই আপনার জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে! তারপরও একটু ধারণা নিয়ে ভেবে দেখুন তো দেশে উচ্চশিক্ষার নামে যা আছে বা চলছে, তাকে উচ্চশিক্ষা বলা যায় কি?
- ট্যাগ:
- মতামত
- উচ্চশিক্ষা
- উচ্চশিক্ষার মান