
পুলিশ কর্মকর্তার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। এই মেরুদণ্ডকে মজবুত করতে পাঠাগারের বিকল্প নেই। পাঠাগার হচ্ছে জ্ঞান ভান্ডার। মানব সভ্যতার ইতিহাস আলোকিত করার শ্রেষ্ঠ অংশ পাঠাগার। আর পাঠাগার হলো বই, পুস্তিকা, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র ও অন্য তথ্য সামগ্রীর একটি সংগ্রহশালা- যেখানে পাঠক গ্রন্থপাঠ, গবেষণা ও তথ্য অনুসন্ধান করতে পারে। পাঠ্যবই পড়ে অর্জন হয় সার্টিফিকেট। নির্ধারিত এক শ্রেণির বিদ্যা। এটা মূলত গ্রন্থগত বিদ্যা। শ্রেণিভিত্তিক জ্ঞানের বাইরেও রয়েছে বিশাল একটি জগৎ। এই বিশাল জগতকে জানতে বই পড়ার বিকল্প নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের কাছে এই বিশাল জগতটাকে পরিচিত করতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরাঞ্চলে মগড়া ইউনিয়নের চৌরাকররা গ্রামে একজন কলেজপড়ুয়া ছাত্র নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার। সমাজের মানুষের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়ানো তথা সুশিক্ষার কথা বিবেচনা করে, ‘এসো বই পড়ি, নিজেকে আলোকিত করি’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার’ নামে পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। পাঠাগারটির প্রতিষ্ঠাতা কলেজপড়ুয়া কামরুজ্জামান (সোহাগ) এখন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত আছেন পুলিশ সদর দপ্তরে।
ছেলেবেলা থেকেই বই পড়তে পছন্দ করতেন কামরুজ্জামান । স্কুলের বন্ধুদের কাছ থেকে বই ধার নিয়ে পড়তেন। ভাবতেন, গ্রামে একটি পাঠাগার থাকলে যখন ইচ্ছা বই পড়া যেত। মাধ্যমিক পাসের পর গ্রাম ছেড়ে টাঙ্গাইল শহরে চলে আসেন কামরুজ্জামান। সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পড়ার সময় ২০১০ সালে নিজ গ্রামে গড়ে তোলেন ওই পাঠাগারটি। তার সেই বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার এখন আলো ছড়াচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। পাঠাগারটিতে বই পড়া, জ্ঞান আহরণ তথা তথ্য অনুসন্ধানের জন্য প্রতিনিয়তই পাঠকরা আসছে এই পাঠাগারে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যে কোন বয়সের নারী-পুরুষ এখানে এসে জ্ঞানের অতল সমুদ্রে হারিয়ে যান। আবার কেউ চাইলে নির্দিষ্ট নিয়মে পাঠাগারের সদস্য হতে পারেন। কোন পাঠক ইচ্ছা করলে পাঠাগারে বসে বই পড়তে পারেন, আবার চাইলে বাড়িতে নিয়েও পড়তে পারেন।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- জ্ঞান চর্চা
- পাঠাগার