দেশবিরোধী অপপ্রচার বন্ধে প্রবাসীদের ভূমিকা
বিভিন্ন অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা অভিযুক্ত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া কয়েকজন তথাকথিত সাংবাদিক এবং বরখাস্তকৃত সামরিক কর্মকর্তা, বিলেতে পালিয়ে থাকা গ্রেনেড হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান, ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান প্রমুখ মিলিতভাবে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন প্রভৃতি দেশে বসে সামাজিক গণমাধ্যমে যে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন, সেগুলো যে সেসব দেশেও অপরাধ, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এ ব্যাপারে এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে আমাদের দূতাবাসগুলো অথবা অন্য কেউ এ পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেননি। নিশ্চিতভাবে এ দায়িত্বটা প্রাথমিকভাবে সেসব দেশে আমাদের দূতাবাসগুলোর, যাদের মৌলিক দায়িত্ব স্বাগতিক দেশগুলোতে অবস্থান করে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ। এসব ইউটিউব অপরাধীরা যে বাংলাদেশের স্বার্থকে মারাত্মকভাবে বিনষ্ট করছেন, তা তো আর কারো চোখে আঙুল দিয়ে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। দূতাবাসগুলোর ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা, যা-ই বলা হোক না কেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই অপপ্রচার, মিথ্যাচারগুলো বাংলা ভাষায় বলে যেসব দেশে বসে এগুলো তাঁরা অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছেন, সেসব দেশের কর্তৃপক্ষ তা বুঝতে অক্ষম। দ্বিতীয়ত, এগুলো কর্তৃপক্ষের নজরে না আনলে তারাই বা কিভাবে জানবে? ইউরোপের বেশির ভাগ দেশে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সেই স্বাধীনতার ওপর নিয়ন্ত্রণও। পৃথিবীর কোনো দেশেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ নয়। একজনের স্বাধীনতা অন্যের স্বাধীনতাকে বিনষ্ট করতে পারে না। সুতরাং এসব অপরাধীচক্র যা লিখছে এবং বলছে, তা যে মত প্রকাশের স্বাধীনতার বাইরে, তা-ও তো কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার, যার জন্য প্রয়োজন বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের সহায়তা। এসব কাজ নিশ্চিতভাবে ব্যয়বহুল বিধায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পক্ষে এ দায়িত্ব নেওয়া কঠিন বৈকি। কিন্তু তার পরও সুইডেনে বসবাসরত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কয়েকজন বাঙালি এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। বিষয়টি এখনো অত্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, অর্থাৎ পুলিশের কাছে দলিল-প্রমাণাদিসহ নালিশ করা হয়েছে মাত্র, তাই এর চূড়ান্ত ফলাফল দেখতে আমাদের বেশ সময় অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু তাঁদের প্রতি সাধুবাদ এ জন্য যে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে এ ব্যাপারে গবেষণা করে নিজ খরচে অন্তত একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছেন, যার থেকে আমরা ভবিষ্যতে সুফল আশা করতেও পারি।