আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি, যখন পরিচয়ের রাজনীতি সবকিছু ছাপিয়ে চিন্তাজগতে গেড়ে বসেছে। জাতীয়তাবাদ কিংবা ধর্ম, যে পরিচয়েই হোক, পরিচয়ের রাজনীতির অনিবার্য ফলাফল হচ্ছে মানুষে মানুষে বিভাজন সৃষ্টি। এ রাজনীতি শুধু অপর তৈরি করছে। শ্রেষ্ঠত্ববাদী মতাদর্শ ও ঘৃণাজাত অপরাধে এর চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ পাচ্ছে। যে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশ্বকে ঐক্য ও সংহতির পথ দেখানোর কথা, সেটাই এখন ঘৃণা ও বিভেদচর্চার প্রধান মঞ্চ হয়ে উঠেছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিল হোক, ভারতের আসাম হোক আর বাংলাদেশের কুমিল্লা, নোয়াখালী, পীরগঞ্জ হোক, এ প্রবণতার বাইরে এখন আর কোনো দেশ বা অঞ্চল নেই।
রাগ, ক্ষোভ, বিদ্বেষ, ঈর্ষা নেতিবাচক অনুভূতি। কিন্তু এসব অনুভূতি থেকে ঘৃণার পার্থক্য রয়েছে। ঘৃণা থেকে বর্বরতম সহিংসতার জন্ম নেয়। এ ধরনের ঘৃণা সমাজে কেন জন্ম নেয়, সে ব্যাখ্যা খুঁজে বের করা খুব জরুরি। কেননা, একবার ঘৃণার জন্ম নিলে তার স্থায়িত্ব সারা জীবনের। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল মনে করতেন, সময়ের সঙ্গে রাগ ও ক্ষোভের উপশম হয়। কিন্তু ঘৃণা কখনো শেষ হয় না। রাগের সঙ্গী যন্ত্রণা, কিন্তু ঘৃণার নয়।