ইদানীং করোনার সঙ্গে
ইদানীং করোনাকে নিয়ে ভয়-ভাবনায় পজিটিভ (করোনার ভাষায় নেগেটিভ) বা স্বস্তি ফিরে আসার আভাস মিলছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনার ভোল পাল্টানো চালবাজির নমুনা দেখে করোনার দেওয়া এই ফুরসত আস্থায় আনা যাচ্ছে না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমাদের বিশেষজ্ঞরাই দ্বিধাবিভক্ত, একদল বলছেন লকডাউন দেওয়ার সুফল মিলছে, রক্ষণশীল শিবির বলছে এতে আত্মতুষ্টির অবকাশ নেই। ভয় কাটেনি। ইত্যাদি। দেশে ডেঙ্গু খালি মাঠে গোল দেওয়ার পাঁয়তারায় আছে। ডেঙ্গুর ধারণা যথার্থ যে করোনা না এলে আজ সে নিজে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবে থাকত। যা হোক পরিস্থিতির সালতামামি করলে দাঁড়ায় করোনার মতিগতি বুঝতে বুঝতে মেঘে মেঘে বেলা তো কম হলো না। ‘শেষ হয়েও হলো না, বা হচ্ছে না’র পর্যায়ে যাওয়ার আগেই বাঁহাতি স্পিনারের মতো বিভ্রান্তিকর বল ছুড়ছেই করোনা, হাতেও উইকেট বেশি নেই , এখনো কত ওভারের খেলা বাকি বোঝা যাচ্ছে না ‘নো বল’ আর ওয়াইডের ছড়াছড়িতে। গত শীতে যিনি বলেছিলেন এপ্রিলে গরম শুরু হলে করোনা কৈলাশে ফিরে যাবেন, সেপ্টেম্বর- অক্টোবরে এসে করোনা তাকেও ছুঁতে ছাড়ল না, নভেম্বরের নির্বাচনে তানার আম ছালা দুটোই গেল। গতবারের অক্টোবরে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার সুযোগ পাননি ভ্যাকসিন আবিষ্কারকম-লি। এবার দেখা যাক। তবে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেই করোনা পালাবার পথ পাবে না এমন ধন্য আশা কুহকিনীর কূলকিনারা এখনো মেলেনি। এখন বাংলাদেশে তো বটেই অধিকাংশ দেশে ভ্যাকসিন ওরফে টিকা নিয়ে রাজনীতি, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির খবর মিলছে। মাঝে মাঝে অক্সিজেন কাড়াকাড়ি, আইসিইউতে সিট মিলছে না এসব খবরও আসছে। তবে এখন কীভাবে বিদ্যায়তন খোলা হবে সে নিয়ে শিক্ষা বিভাগ মহা কর্মযজ্ঞে। কাশিমবাজার কুঠি থেকে তাগিদ যেহেতু এসেছে এখন শিক্ষা শুরু করতেই হবে। গ্রামাঞ্চলে করোনা ছিল না বহুদিন তখন কোথায় ছিলেন তারা এ প্রশ্ন এখন অবান্তর। ঘরে থাকতে থাকতে সবাই কেমন যেন হাঁপিয়ে উঠছেন। দল বেঁধে পশ্চিমে পাড়ি দেওয়ার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সীমিত আয়োজনের মধ্যেও। তবুও ভয় থেকে যাচ্ছে। সামনে শীতকাল, ইতিমধ্যে ইথারে চাউর হচ্ছে করোনার কোয়ার্টার ফাইনালের পর্দা উঠবে। এমত অবস্থায় করোনাকে মোকাবিলার নতুন ছক আঁকা নিয়ে বিভ্রান্তির রেশ রয়েই যাচ্ছে। ভেতরে-ভেতরে সবাই ধরে নিচ্ছেন, করোনা যখন থাকবেই আরও বেশ কিছুটা কাল, তাহলে তার সঙ্গে সহাবস্থানের একটা সমঝোতায় যাওয়া যুক্তিযুক্ত হবে বলে মনে করছেন অনেকে।