গরিবের বাজেট হবে কবে?
বাজেট মানে বছরের হিসাব-নিকাশ। ভালো সংসারীরাও বছরের শুরুতে আনুমানিক বাজেট করেন। গাঁওগেরামের হিসাব-নিকাশ শুরু হয় বাংলা বছর ঘিরে। শহুরে নাগরিকরা পাশ্চাত্যের অনুসরণে জানুয়ারি-ডিসেম্বরে হিসাব মেলাতে চান। আবার পুঁজিবাদী বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত বার্ষিক বাজেট যেহেতু জুলাই থেকে পরের বছরের জুন পর্যন্ত সেহেতু আমাদের সরকারও তাদের অনুসরণ করে। কেতাবি ভাষায়- বাজেট হচ্ছে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পদের কর্তৃত্বপূর্ণ বণ্টন। যে সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে রাষ্ট্রের সমুদয় সম্পদ থাকে তাদের করতলগত। উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই সম্পদ বণ্টনে সরকার থাকে সদা সতর্ক। প্রতি পদে পদে তাদের জবাব দিতে হয়। তাদের অর্থ বরাদ্দ ও খরচের পদ্ধতিও তেমন। আর আমাদের দেশে সরকার দেশের সম্পদকে তাদের একান্ত সম্পত্তি মনে করে। তাই বরাদ্দ ও ব্যয় নিয়ে তাদের জবাবদিহিতা নেই। বরং কিভাবে ওই জবাবদিহিতা এড়িয়ে যেতে হয় তার বিধিব্যবস্থা সরকার প্রণীত আইন ও পদ্ধতিতেই বিধৃত থাকে। মনীষী মার্কস বলেছেন, প্রতিটি কার্যক্রমই অর্থনৈতিক। একে তারা বলেন, ‘অর্থনৈতিক নির্ধারণবাদ’। আর ওই নির্ধারক নির্ণিত হয় শ্রেণী চরিত্র দ্বারা। একটি ধনিক-বণিকের সরকার যদি ক্ষমতায় থাকে তা হলে তাদের স্বার্থেই ‘বড়লোকের বাজেট’ প্রণীত হয়। আর যদি গরিবের সরকার হয় তাহলে বাজেটও হবে গরিবের। গরিবের সরকার তখনই হবে যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ গরিব মানুষের ভোটের অধিকার থাকবে। আজকালকার বিশ্বে ভোটের মাধ্যমে নির্ণীত হয়- সরকারটি গরিবের হবে নাকি বড়লোকের। তবে যদি বড়লোকেরা দেখে ভোট হলে তাদের সর্বনাশ। তারা কখনোই ক্ষমতায় আসবে না, তখন তারা ভোট ভোট খেলা করে। বাইরের লোকেরা দেখে ভোট হচ্ছে। লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। কেন্দ্র আছে।