চিকিৎসক ও পুলিশের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি
করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারি আদেশ বাস্তবায়নের সময় মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহযোগী অধ্যাপক সাঈদা শওকত অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
রোববার এলিফ্যান্ট রোডের নিরাপত্তাচৌকিতে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এই বিবৃতি দিল। ওই দিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ এক চিকিৎসকের গাড়ি আটকে পরিচয়পত্র দেখতে চান। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে চিকিৎসককে উত্তেজিত ভঙ্গিতে কথা বলতে শোনা যায়। দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি পক্ষ তৈরি হয়।
একটি পক্ষের দাবি, চিকিৎসককে ইচ্ছা করে হয়রানি করা হয়েছে। তাঁর গাড়িতে লকডাউনের সময় হাসপাতালে কাজ করার আদেশনামা ছিল, পরনে অ্যাপ্রোন ছিল এবং গাড়িতে হাসপাতালের স্টিকার লাগানো ছিল। অন্য পক্ষের দাবি, চিকিৎসক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেছেন এবং গালি দিয়েছেন।
চিকিৎসককে ‘হয়রানি’ করার প্রতিবাদ বিএসএমএমইউয়ের
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক ডা. সাঈদা শওকত জেনির সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বাগবিতণ্ডার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছে তারা।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার প্রেরিত এ প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিএসএমএমইউয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোছা. সাঈদা শওকতের সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের কথোপকথনের সচিত্র প্রতিবেদন সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হয়েছে।
চিকিৎসকের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে চলছে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন। চলমান লকডাউনের মধ্যে গতকাল রবিবার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে পরিচয়পত্র চাওয়া নিয়ে চিকিৎসক, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
চলমান লকডাউনে দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ‘নিগ্রহ’ ও ‘হয়রানির’ শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন, বিএমএ।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) সংগঠনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে, এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ চেয়েছে বিএমএ।
পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট-চিকিৎসকের ঝগড়া আদালতে গড়ালো
দেশজুড়ে সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে পুলিশ ও একজন নারী চিকিৎসকের বাকবিতণ্ডার ভিডিও এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে। সেই ভিডিও দেখে কেউ কেউ নারী চিকিৎসক আবার অনেকেই পুলিশের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়ালো।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ইউনুছ আলী আকন্দ নামের একজন আইনজীবী ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের চলমান লকডাউনে মুভমেন্ট পাস নিয়ে চিকিৎসক- ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ঘটনা হাইকোর্টের নজরে আনা হয়েছে।