স্তন ক্যানসার শনাক্তের পরীক্ষা আপনি নিজেই করতে পারেন
পৃথিবীর কোথাও না কোথাও স্তন ক্যানসারের কারণে প্রতি ৭০ সেকেন্ডে একজন নারী মৃত্যুবরণ করে। স্তন ক্যানসার বিশ্বের এক অন্যতম নীরব ঘাতক। স্তনে রয়েছে একধরনের গ্ল্যান্ড বা লালাগ্রন্থি, যাকে বলা হয় লবিউল (Lobule)। এই লবিউলে তৈরি হয় দুধ। লবিউল থেকে অসংখ্য পাতলা বা সরু নালির মধ্য দিয়ে দুধ পৌঁছে স্তনের বোঁটায় (Niple)। স্তনের কোষ সমষ্টিতে (Tissue) আরো থাকে চর্বি, লিস্ফনোড (Lymphnode), রক্তনালি ও সংযোজক পেশি। দুগ্ধনালির কোষের ভেতরের দেয়ালে সৃষ্ট ক্যানসারকে বলা হয় ডাক্টাল বা নালির কারসিনোমা (Ductal Carcinoma) । আর লবিউলে সৃষ্ট ক্যানসারকে বলা হয় হয় লবিউলার কারসিনোমা (Lobular Carcinoma)। স্তনে এই দুই ধরনের ক্যানসার সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। উৎপত্তিস্থল থেকে ক্যানসার কোষ যদি আশপাশের কোষসমষ্টিতে বা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, তখন তাকে বলা হয় ইনভেসিভ (Invasive) বা আক্রমণমূলক ক্যানসার।
টিউমার থেকে ক্যানসার কোষ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়লে তাকে মেটাস্ট্যাসিসও (Metastasis) বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে নারীরা শীর্ষস্থানে থাকা চর্ম ক্যানসারের পর দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্তন ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত হয়। পুরুষের মধ্যে স্তন ক্যানসার হতে পারে, তবে তা বিরল। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ২৩ হাজার পুরুষ এবং ২ লাখ ৩০ হাজার নারী নতুনভাবে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। বিশ্বব্যাপী স্তন ক্যানসারেই নারীরা বেশি আক্রান্ত হয়। স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত নারীদের ২২ দশমিক ৯ শতাংশ ইনভেসিভ ক্যানসারের শিকার। সব রকম ক্যানসারে মৃত্যুর মধ্যে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ মৃত্যু হয় স্তন ক্যানসারের কারণে। ২০১২ সালে ১৭ লাখ নারী ক্যানসারে আক্রান্ত হয় এবং তার মধ্যে ৫ লাখ ২১ হাজার মারা যায়। অনুন্নত দেশের চেয়ে উন্নত দেশে মানুষের গড় আয়ু অনেক বেশি। নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি দিন বাঁচে এবং এ কারণে বয়স্ক নারীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের প্রকোপ বেশি হয়। উন্নত দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইল স্বাস্থ্যসম্মত না হওয়ার কারণে বেশি মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়।