অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ কত দূর
সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থানের পর এ দেশে ধর্মের নিরিখে বিভাজনটা বেড়েছে গাণিতিকভাবে। অথচ আধুনিক যোগাযোগের এই মাধ্যমটি হয়ে উঠতে পারত বিভাজন কমানোর বড় হাতিয়ার। কিন্তু ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার কারণে ধর্মের নিরিখে বিভাজনটা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার বড় এক দুর্বলতা হলো এই ফেক নিউজ। লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, এ দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার যে কয়টি ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর বেশিভাগই ছড়িয়েছে ভুয়া বা ফেক নিউজ থেকেই। সাঈদীকে চাঁদে দেখা নিয়ে গুজব, এ ছাড়া রামুতে যে ডজনখানেক বৌদ্ধমন্দির ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয় এবং বৌদ্ধদের ওপর যে হামলার ঘটনা ঘটেছিল, সেটিও ভুয়া সংবাদের ওপর ভিত্তি করেই। সেখানকার উত্তম বড়ুয়া নামে যে বৌদ্ধ তরুণের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে খবরটি ছড়িয়েছিল, সেটি ছিল ফেক অ্যাকাউন্ট। সেই উত্তমের নেপথ্যের উত্তমের আর খোঁজ মেলেনি আজও।
সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থানের পর এ দেশে একশ্রেণির ধর্মীয় বক্তার আবির্ভাব ঘটেছে। এরা বক্তৃতায় খুবই দক্ষ। ফলে কোমলপ্রাণ তরুণদের এরা খুব সহজেই প্রলুব্ধ করে ফেলে। কিন্তু বক্তারা নিজেরা ধর্ম সম্পর্কে ভুল তথ্য সরবরাহ করে প্রায় সময়ই। এসব ভুল বক্তৃতা বিশাল তরুণসমাজকে বিপথগামী করে ফেলে। ধর্মপ্রাণ আর ধর্মান্ধতা এক বিষয় নয়। এ দেশের বেশিভাগ মানুষ একসময় ধর্মপ্রাণ ছিলেন। সব ধর্মের মানুষ তখন মিলেমিশে বসবাস করতেন। এখন ধর্মান্ধ মানুষজন বেশি। গুণগত মানের শিক্ষার অভাবে ধর্মান্ধ মানুষ বাড়ছে। দিনকে দিন এই সংকট প্রকট হচ্ছে।