এলডিসি থেকে উত্তরণ: প্রশ্নটা আত্মমর্যাদার
জাতিসংঘের বিচারে চূড়ান্তভাবে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে বের হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) পাঁচ দিনের বৈঠক শেষে শুক্রবার এই সুপারিশ করেছে। প্রথম দফায় ২০১৮ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হওয়ার যোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এলডিসি থেকে বের হতে সিডিপির পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি পেতে হয়। স্ব্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রস্তুতির জন্য সাধারণত তিন বছর এলডিসি হিসেবে থাকে একটি দেশ। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার কথা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন। তার নেতৃত্বেই গত এক যুগের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এই উত্তরণে ভূমিকা রেখেছে।
অবশ্য স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত রাষ্ট্রের যে বিভাজন, তা আমার কাছে মেকি মনে হয়। সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে কিছু দেশ নানান সমস্যায় জড়িত থাকায় এগিয়ে যেতে পারছিল না। ওই দেশগুলোকে এগিয়ে নিতে বিশেষ সহায়তার প্রয়োজন ছিল। জাতিসংঘ সে লক্ষ্যেই স্বল্পোন্নত ধারণাটি সামনে আনে। যাতে ওই দেশগুলোকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি বাণিজ্য সুবিধা, উন্নয়ন সুবিধা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ছাড়ে, সহজ শর্তে ঋণ বা অনুদান দেওয়া হয়। প্রকৃতপক্ষে সব দেশই উন্নয়নশীল, সবাই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে কেউ এগিয়ে যাচ্ছে, আর কেউ এগিয়ে যেতে পারছে না। আবার কোনো দেশ কখনও এগিয়ে যাচ্ছে, কখনও পিছিয়ে পড়ছে। মোটের ওপর সব দেশই উন্নয়নশীল। এমনকি উন্নত দেশগুলোও কোনো কোনো অর্থে উন্নয়নশীল। স্বল্পোন্নত শব্দটি অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য শব্দ নয়। এর সঙ্গে সম্মান ও ভাবমূর্তির বিষয় জড়িত। পৃথিবীর কয়েকটি দেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি নেয়নি। মোট ৪৮টি দেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং এর সুযোগ-সুবিধাগুলো পেয়ে আসছে।