বিএনপি অবশেষে ড্রামতত্ত্ব সামনে আনতে চাইছে
বিএনপি নামক দলটি সব রাস্তায় মার খেতে খেতে এখন চোরাগলিতে হাঁটতে শুরু করেছে। এ পর্যায়ে ড্রামতত্ত্ব সামনে আনার চেষ্টা করছে। সর্বশেষ তাদের আবিষ্কার হলো, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়েছে, এটা ঠিক কিন্তু সামরিক নেতৃত্ব দিয়েছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ ছিল শরণার্থী মুক্তিযোদ্ধা। বিএনপির একজন নারীনেত্রী কদিন আগে এক টক শোতে বলছিলেন, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা যুদ্ধ না করে কলকাতার সোনাগাছিতে মদ-মাস্তি করে কাটিয়েছে। ওই সুন্দরী নারীনেত্রী একসময় এমপিও ছিলেন। নাকে-মুখে কথা বলেন, যার পনেরো আনাই মিচা-বানোয়াট। তিনি ওই সোনাগাছি-তত্ত্বটি দেয়ার পর আমার প্রশ্ন ছিল, ভদ্রমহিলা সোনাগাছি চিনলেন কী করে। সোনাগাছিতে কী ধরনের কী সব হয়, তিনি জানলেনইবা কেমন করে। ভদ্রমহিলার নাম-পরিচয় প্রকাশ করলাম না, আফটার অল তিনি সুন্দরী শিক্ষিতা মাঝবয়সী নারী। মানমর্যাদার প্রশ্ন।
বিএনপির ড্রামতত্ত্বটি খুব ইন্টারেস্টিং। একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ইয়াহিয়ার নিরস্ত্র বাঙালির ওপর সশস্ত্র হামলা এবং গণহত্যা শুরুর মুহূর্তে বিএনপির ড্রামতত্ত্বের অভিনেতা মিলিটারি জিয়া পাকি অস্ত্রবোঝাই জাহাজ সোয়াত থেকে অস্ত্র খালাসের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত ছিলেন। একপর্যায়ে কয়েকজন বাঙালি মিলিটারি তার পথ আগলে দাঁড়ান এবং তাকে অন গান পয়েন্ট ফিরিয়ে আনেন এবং পাকিস্তানি পক্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। এভাবে ২৭ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তাকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরের স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করান। ড্রামতত্ত্বটি হলো, বাঙালি সৈনিকরা যখন তাকে সোয়াত জাহাজের দিকে না যেতে বাধ্য করলেন, তখন তিনি নাকি রাস্তার পাশে পড়ে থাকা একটি ড্রামে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, উই রিভল্ট। আশির দশকের শেষের দিকে দলটি এই তথ্যটি আবিষ্কার করে। কিন্তু তখন একে জনপ্রিয় করতে পারেনি। তখন তারা মিলিটারি জিয়াপত্নী খালেদা জিয়াকে কখনো আপসহীন নেত্রী, কখনো দেশনেত্রী তকমা লাগাতে ব্যস্ত ছিলেন।