কাঁঠালের ফলন ভাল হলেও দাম পাচ্ছে না বাগান মালিকেরা

বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২০, ১৩:০০

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের বাগানে কাঁঠালের প্রচুর ফলন হয়েছে। শ্রীপুরের কাঁঠালের সুখ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। তাই এখানকার কাঁঠালের চাহিদা দেশের অন্য এলাকার তুলনায় একটু বেশি। বন্যার ঝুঁকি না থাকা এবং মাটির উর্বতার কারণে শ্রীপুরে কাঁঠালের ফলন বেশি ও সুস্বাদ। কাঁঠাল দ্রুত পঁচনশীল হওয়ায় কোনো কোনো সময় লাভের চেয়ে ক্ষতির অঙ্ক কষতে হয় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের। আর এ কারণেই কাঁঠাল সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দীর্ঘদিনের দাবি এ এলাকার কাঁঠাল বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের।

সরকারি-বেসরকারি কোনো পন্থায় প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকায় বাগান মালিকেরা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ এলাকায় সংরক্ষণাগার স্থাপন করা গেলে কাঁঠাল চাষে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়া যেতো। কাঁঠাল চাষের আলাদা যন্ত্র ও খরচ না থাকায় অল্প বিনিয়োগ লাভজনক আবাদ হিসেবে সাফল্য পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকেরা। কাঁঠাল বাগানের মালিকরা জানিয়েছে বাগানগুলোতে এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হলেও দাম ও ভালো পাওয়া যাচ্ছে না।

উৎপাদিত কাঁঠালের বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। তারা অভিযোগ করেন দীর্ঘদিনেও বিদেশে কাঁঠালের বাজার সৃষ্টি করতে না পারায় সম্ভাবনাময় একটি কৃষিখাত ধ্বংস হতে চলেছে। মহামারী করোনাকালে বাগান মালিকেরা উপযুক্ত দামে কাঁঠাল বিক্রি করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে যেসব ব্যবসায়ী বাগান কিনেছেন তারাও দেশের বিভিন্ন এলাকায় কাঁঠাল পাঠাতে পারছেন না।

তেলিহাটি ইউনিয়নের কাঁঠাল বাগান মালিক কায়সার মৃধা খোকন বলেন, অন্যান্য ফল ও গাছ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যত তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় কাঁঠাল নিয়ে তার সিকি ভাগও হয় না। কোন কোন পরিবার ফল মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি করে সারা বছরের আয় করে। ২ থেকে তিন মাস কাঁঠালের ভরা মৌসুম এসময় পাইকার ও শ্রমিক শ্রেণির লোকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়। এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কাঁঠালের ভাল ফলন হয়েছে। তবে ফলন বেশি হলে দাম না পাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। কারণ বেশি ফলনে দাম পড়ে যাওয়ার রেওয়াজও রয়েছে।

টেপির বাড়ী গ্রামের কাঁঠাল বাগান মালিক তাইজুদ্দিন বলেন, তার কাঁঠালের দুটি বাগান রয়েছে। প্রতি বছর তিনি প্রায় ৩ লাখ টাকার কাঁঠাল বাগান বিক্রি করেন। ফলন ভালো হওয়ায় এবার গত বছরের চেয়ে এবার বেশি দাম পাওয়ার আশা করছেন। কিন্তু, করোনার কারণে সঠিক দাম ও বিক্রি নিয়ে টেনশন হচ্ছে।উপজেলার গাজীপুর গ্রামের বাগান মালিক আব্দুর রহমান জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর বাগানে অনেক বেশি কাঁঠাল ধরেছে। তিনি প্রতি বছর প্রায় লাখ টাকার কাঁঠাল বাগান বিক্রি করেন। এ বছরও ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু করোনাকালে কাঁঠাল নিয়ে বিপাকে আছেন।

উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের কোড়লপাড়া গ্রামের বাগান মালিক আব্দুর রউফ জানান এ বছর কাঁঠালের ফলন খুবই ভাল তবে বাজারে দাম একেবারেই কম। কাঁঠালের উৎপাদন খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। কেওয়া গ্রামের বাগান মালিক নূরুল আলম বিএসসি বলেন, করোনার কারণে কাঁঠালের দাম কম। শতাধিক কাঁঠাল গাছ রয়েছে তার। অন্যান্য বছরের মতো এবছর বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারী না আসায় কাঁঠালের উপযুক্ত দাম পাওয়া যাচ্ছে না।


সড়কে পর্যাপ্ত পরিবহন না চলার কারণে কাঁঠাল বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না। গাছের কাঁঠাল গাছেই পেকে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছি। তাছাড়া, এলাকায় কোন কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার বাবস্থা না থাকায় তারা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অবিলম্বে অত্র এলাকায় একটি কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থা গড়ে তুললে এ উপজেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে বলে মন্তব্য সচেতন মহলের।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও