হজ নিয়ে সিদ্ধান্ত দেয়নি সৌদি আরব, কাটেনি অনিশ্চয়তা
বাংলাদেশ থকে যারা নিবন্ধন করেছন তারা সবাই কী শেষ পর্যন্ত হজে যেতে পারবেন, এমন প্রশ্ন ঘুরছে অনেকের মনে। কারণ করোনার কারণে বিদেশিদের হজ বাতিল হবে নাকি সীমিত আকারে সুযোগ দেওয়া হবে এই বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি সৌদি আরব। তবে এটা স্পষ্ট যে, হজের সুযোগ মিললেও কঠোরভাবে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, বাড়বে খরচ। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত অপেক্ষার কথাই বলছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৯ জুন) হজ নিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার সীমিত পরিসরে হজ আয়োজন করতে পারে সৌদি আরব। হজ পালনের জন্য প্রত্যেক দেশের যে নির্ধারিত কোটা আছে, তার ২০ শতাংশ ব্যক্তি এবার হজে যেতে পারবেন। সেই হিসেবে প্রতিবারের তুলনায় এবার হজের পরিসর হবে পাঁচ ভাগের এক ভাগ। রয়টার্স তাদের নিজস্ব সূত্রের বরাতে দিয়ে আরও জানিয়েছে, করোনা মোকাবিলায় এবার হজ বাতিলের জন্য চাপ দিচ্ছেন কিছু সৌদি কর্মকর্তা। তবে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ‘প্রতীকী সংখ্যক’ মুসল্লিদের হজের অনুমতি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সিলর (হজ) মো. মাকসুদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'আমরা সকাল থেকেই সৌদি আরবের হজ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করেছি, কিন্তু অফিসিয়ালি তারা কোনও সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।'
জানা গেছে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর হজ হতে পারে ৩০ জুলাই। এর আগে, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিদেশিদের ওমরাহ পালন স্থগিত করে সৌদি আরব। একই সঙ্গে পর্যটন ভিসা নিয়ে আসা বিদেশিদের প্রবেশও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দুই মাসেরও বেশি সময় পর করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল করে সৌদি আরবের মসজিদগুলো খুলে দেওয়া হয়। যদিও ফের ৫ জুন হজ ও ওমরাহ পালনের জন্য মক্কায় যাওয়ার প্রবেশপথ বন্দর নগরী জেদ্দায় নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করে দেশটি।
জানা গেছে, এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন বলে জানায় সরকার। ২৪ ফেব্রুয়ারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে প্যাকেজ-১ এ ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২ এ ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং প্যাকেজে-৩ এ ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়।
২৭ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি হজ প্যকেজ ঘোষণা করে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন (হাব)। একটি হলো সাধারণ, অন্যটি ইকোনমি। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ যাত্রীদের জন্য সাধারণ প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮শ টাকা, আর ইকোনমি প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা। এটিই সর্বনিম্ন বেসরকারি হজ প্যাকেজ।
সূত্র জানায়, সৌদি আরব সীমিত পরিসরে হজের অনুমতি দিলেও আরোপ হবে নানা রকম বিধি নিষেধ। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণকরে পরিচালিত হবে হজ কার্যক্রম। যাত্রীদের আবাসন, যাতায়াত, হজ কার্যক্রম পরিচালনায় থাকবে কঠোর নজরদারি। এসব কারণে বাড়তে পারে হজ পালনের খরচ।