লকডাউনের সুবিধা ‘হাতছাড়া’ হয়েছে বাংলাদেশের!
৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে প্রথম দিনেই সর্বোচ্চ ৪০ জন মানুষের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। রোগী শনাক্তের ১৩তম সপ্তাহে এসে করোনায় সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা। সঠিকভাবে লকডাউন ঘোষণা না করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা, পরে লকডাউন বলা হলেও তা নিরবচ্ছিন্ন না থাকা এবং ঠিকমতো বাস্তবায়ন না করার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং সামনে আরও কঠিন সময় আসছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সবদিক থেকেই ঊর্ধ্বমুখী। নমুনা পরীক্ষা যেমন বাড়ছে, শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কার্যত সাধারণ ছুটি কার্যকর না হওয়ার কারণে এটা হচ্ছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকায় আনা, ঢাকা থেকে ফেরত যাওয়া, ঈদ উপলক্ষ্যে শপিং মল সীমিত হলেও খুলে দেওয়ার ফলাফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে এখন যে সাধারণ ছুটি তুলে দেওয়া হলো, এর ফলাফল পাওয়া যাবে ১৪ থেকে ২১ দিন পর।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্ত হয় এবং প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। এরপর ২৬ মার্চ থেকে শরু হয় সাধারণ ছুটি। কিন্তু তার ঠিক একমাস পর ২৬ এপ্রিল পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়। এর ঠিক দুই সপ্তাহ পর থেকে সংক্রমণের দশম সপ্তাহ (১০ থেকে ১৬ মে) দেশে করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি শুরু হয়। এরপর থেকে গত তিন সপ্তাহ ধরেই শনাক্ত এবং মৃত্যুর হার বাড়ছে।
ঢাকা ফেরতরা ঢাকায় আসার পর অনেক মানুষ একসঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে মন্তব্য করে জনস্বাস্থ্যবিদ ও রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ( আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'মতিঝিলের মতো ডাউন টাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস খুলে দিলেও রাস্তায় মানুষের জট হবে, যা সংক্রমণ ছড়াবে। চূড়া থেকে নামার দুই সপ্তাহ পরে বোঝা যাবে চূড়া থেকে নেমেছি। আমরা রোগ সংক্রমণ কমানোর পদক্ষেপ না নিয়ে শুধু বাড়ানোর কাজই করে যাচ্ছি।'
তিনি আরও বলেন, 'সংক্রমণ কমানোর পদক্ষেপ নিলে তার ফলাফল পাওয়া যাবে চার সপ্তাহ থেকে ছয় সপ্তাহ পর। কিন্তু সেটা আমরা করছি না, সংক্রমণের বাড়াবার কাজটাই করছি আমরা।'