করোনার চিকিৎসায় ‘আপত্তি’ অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালের
দেশে চলমান কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ আসছে প্রতিদিনই। বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগও উঠছে। এ পরিস্থিতিতে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিকে কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সরকারি মেডিকেলগুলো করোনা ইউনিটের জন্য প্রস্তুতি নিলেও বেসরকারি মেডিকেলগুলোর সংগঠন এমন নির্দেশনায় আপত্তি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ঢালাওভাবে এমন সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন তারা এবং সব মেডিকেলের পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত মানাও সম্ভব নয়।
জানা গেছে, সারাদেশে ৫০ বেড ও তার বেশি বেড সম্পন্ন বেসরকারি মেডিকেল রয়েছে ৫ হাজার ৩২১টি, সেখানে মোট বেডের সংখ্যা প্রায় ৯১ হাজার। এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৯৭টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনা সেবা চলছে। এসব হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৬৪টি। এবং আইসিইউ শয্যা ৩৯৯টি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে সব হাসপাতালকে তিনটি জোনে ভাগ করতে বলা হয়েছে। এরমধ্যে রেড জোনে থাকবে করোনা রোগী, ইয়োলো জোনে থাকবে করোনা সন্দেহভাজন রোগী এবং গ্রিন জোনে থাকবে নন-কোভিড রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বার্তা২৪.কম-কে জানান, সারাদেশে ৫০ বেড ও তার বেশি বেড সম্পন্ন বেসরকারি মেডিকেল রয়েছে ৫ হাজার ৩২১টি, সেখানে মোট বেডের সংখ্যা প্রায় ৯১ হাজার। প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ৯০ হাজার ৫২৯টি। আর মোট সরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ৬৫৪টি। এরমধ্যে জেলা পর্যায়ে ১৪০ সরকারি মেডিকেলে বেড রয়েছে ৩১ হাজার ২৬০টি। এবং থানা পর্যায়ে হাসপাতাল রয়েছে ৫১৪টি, যেখানে মোট বেড রয়েছে ২০ হাজার ৫৬টি।
গত রোববার (২৪ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাব অনুযায়ী কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যা ও তার বেশি শয্যা বিশিষ্ট সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড ও নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিকে কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিকে কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে। কারণ সরকারি এসব আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করতে হয়, সেজন্য কোন সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। প্রতিনিয়ত যেহেতু করোনা রোগী বাড়ছে তাই ডেডিকেটেড মেডিকেলগুলোই যথেষ্ট নয়। মেডিকেলগুলো রেজিস্ট্রেশন দেয়ার সময় কিছু শর্ত থাকে যে-কি করা যাবে, কি করা যাবে না। সরকারের আদেশ মানতে হবে। এরকম দুঃসময়ে যারা সরকারের আদেশ বা রোগীদের পাশে থাকবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনসম্মত সিদ্ধান্ত সরকার নিতে পারে।