এই ঈদ যেন শেষ ঈদ না হয়: আইজিপি
করোনাভাইরাসের কারণে চলমান দুর্যোগে জনগণের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করা চলবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বেঁচে থাকলে অনেক ঈদে পরিবারের সঙ্গে শামিল হতে পারব। দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে এই ঈদ যেন আমাদের জীবনের শেষ ঈদ না হয়।’ মঙ্গলবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। করোনা ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
করোনার মধ্যেও মানুষের বাড়ি ফেরার ভিড়ের বিষয়টি তুলে ধরে পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমি বাড়ি যাব, অন্যরা ঢাকায় থাকবে এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মৃত্যুর মিছিলে আপনি হবেন একটি মাত্রা সংখ্যা। কিন্তু আপনার পরিবারের কাছে আপনি একটি পৃথিবী। তাই দায়িত্বহীন আচরণ করা চলবে না। দয়া করে যে যেখানে আছেন, সেখানেই অবস্থান করেন।’ বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা এক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের সবাইকে সমানভাবে অংশ নিতে হবে।
সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। তাড়াহুড়ো করে ঈদের ছুটিতে কেউ ঢাকা ছাড়বেন না।’ কিছু মানুষ পায়ে হেঁটে বিকল্প পথে ঢাকা ছাড়ছেন বলেও জানান তিনি। আইজিপি বলেন, ‘গত এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশের ২৪ জেলা করোনা মুক্ত ছিল। পরে সাধারণ মানুষের চলাচলের কারণে সব জেলায় আক্রান্ত হলো।’ তিনি বাড়িমুখো মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার গ্রামবাসীর কাছে মৃত্যুর দূত হয়ে যাবেন না। ঢাকা শহরের চারপাশের মানুষকে নিরুৎসাহিত করছি।
ফেরিঘাটে সতর্কতা চলছে। তারপরও অনেকে লঞ্চে-টলারে যাচ্ছেন। নৌপুলিশকে বলেছি তাদের ফিরিয়ে আনতে।’ ঈদুল ফিতরের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার বিষয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা করা হবে। সবাই মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ে দ্রুত বাসায় ফিরে যাবেন। আনন্দ-ফূর্তি করার জন্য ঘর থেকে বের হবেন না। আমরা যদি ঈদুল আজহার আগে করোনা থেকে মুক্তি হতে পারি তাহলে আগামী ঈদ উদযাপন করব।’ পুলিশ প্রধান বলেন, ‘ঈদের কেনাকাটায় বাজারগুলো খোলা রাখা হয়েছে। আমরা সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করব। মনে রাখতে হবে আমাদের এই কেনাকাটা যেন শেষ কেনাকাটা না হয়।
এটা কোন জুজুর ভয় নয়। এটি বৈশি^ক মহামারি।’ দেশে সান্ধ্য আইন জারি করা হবে কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। দেশের মানুষের জন্য যেটা ভালো হবে সেটাই করবেন। এই ক্রাইসিস মোকাবিলায় অন্য দেশের পদক্ষেপ কপি-পেস্ট করতে পারব না। আমরা যেন দ্রুত অন্য কালচারে মোটিভেটেড হয়ে না যাই। অন্য দেশের সেন্টিমেন্ট ও আমাদের দেশের সেন্টিমেন্ট এক নয়। আমরা গত দুইমাসে শারীরিক শক্তি বা ফোর্স প্রয়োগ না করে কাজ করেছি।’ (ঢাকাটাইমস/১৯মে/এএ/এইচএফ)