কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

You have reached your daily news limit

Please log in to continue


দূষণের অভিশাপ (ভিডিও)

এই খালের পানি এতো পরিষ্কার ছিলো যে, পানির নিচে মাটি পর্যন্ত দেখা যেতো। গ্রামের লোকজন এই খালের পানিই পান করতো, সবাই এখানে গোসলও করতো। কিন্তু, এখন এই খাল দিয়ে শুধু বর্জ্য প্রবাহিত হয়। এটি এতো দুর্গন্ধময় যে এর পাশে দাঁড়ানোই দায়, বললেন বড়বাড়ী গ্রামের প্রবীণ তারা মিয়া। “আমরা এই এলাকার সব লোকজন এই খাল এবং বিলে মাছ ধরতাম। এখন আপনি এই পানিতে একটা ব্যাঙও পাবেন না। মশা ছাড়া আর কিছু এখানে বাঁচতে পারে না।” “১৯৯০ এর দশকে যখন থেকে এই অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপিত হলো, তারপর থেকে সব খালবিলও দুষিত হয়ে গেলো, আর শুরু হলো মানুষের দুর্ভোগ,” হায়দ্রাবাদের ঠিক পাশেই একটি ছোট চায়ের দোকানে বসে স্মৃতিচারণ করছিলেন তারা মিয়া। হায়দ্রাবাদ ব্রিজের পাশে এই চায়ের দোকানের পিছন দিয়েই বয়ে যাচ্ছে পিচ রংয়ের কালো দুষিত পানি। গাজীপুরা, বড়বাড়ী এলাকা দিয়ে এসে চাংকিরটেক বিল হয়ে খালটি চলে গেছে দক্ষিণ দিকে, মাজুখান ব্রিজের কাছে গিয়ে মিশেছে তুরাগ নদীতে। শুকুন্দিরবাগ গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত তুরাগের এই শাখাকে স্থানীয়রা তুরাগ খাল বলেই ডাকে। বাতাস বওয়ায় খাল থেকে আসা দুর্গন্ধে প্রায় দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। স্থানীয় যুবক শামীম হোসেন ও মাসুদুল বিল্লালও এসে আলোচনায় যোগ দিলেন। “এখন আমরা এই গন্ধে অভ্যস্ত। তবে আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে এলে তারা এই দুর্গন্ধ সহ্য করতে পারে না। আর এতো মশা এই অঞ্চলে! মশার জ্বালায় আমরা অস্থির,” জানালেন হায়দ্রাবাদ গ্রামের যুবক শামীম হোসেন। গত সপ্তাহে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাজীপুরের টঙ্গীর গাজীপুরা এলাকায় অবস্থিত নিটিং ফ্যাক্টরি, টঙ্গী বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিএসসিআইসি) বিভিন্ন শিল্পকারখানা, গার্মেন্টস ওয়াশিং প্লান্টগুলো থেকে নির্গত তরল বর্জ্যের দূষণে বিপর্যস্ত এই অঞ্চলের খাল, বিল, নদীগুলো। তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে, টঙ্গী সিটি কর্পোরেশনের ময়লা পানি। দূষণের কারণে এই অঞ্চলের গাজীপুরা, বড়বাড়ী, কুনিয়া, বাঘাইলকুর, শুকুন্দি, নিমতলী, এরশাদনগর, বনমাই, দত্তপাড়া, হরবাইত, বাইজারটেক, হায়দ্রাবাদ ও মাজুখনসহ আশেপাশের বিশাল এলাকার লোকজন বিপর্যস্ত। খালের দুই পাড়ের লোকজনের সমস্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। গ্রামের অনেকের আবাদি জমি আছে, কিন্তু সেখানে ফসল হয় না। হলেও ফলন খুব কম। তারা জানালেন, ক্ষেত্রবিশেষে তাদের উৎপাদন খরচই উঠে আসে না। চাংকিরটেক বিলে জমি আছে এমন অনেক কৃষক জানালেন, তারা কেউ কেউ জমি বিক্রি করতে চান। কিন্তু, দুর্গন্ধযুক্ত দূষিত পানির মধ্যে কেউ জমি কিনতে চায় না। কৃষকরা জানালেন, চাঁকিরটেক বিলে অনেক গ্রামবাসীর জমি থাকলেও তারা চাষাবাদ করতে চান না। কারণ, তাদের ফসলও দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুকুন্দিরবাগ গ্রামের আসাদ মিয়ার সঙ্গে দেখা হলো। তিনি খাল থেকে কালো রঙের পানি তুলে সবজি জমিতে সেচ দিচ্ছিলেন। আসাদ জানালেন, তুরাগ নদীর তীরে তিনি প্রায় দুই একর জমি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। “প্রতি বছর আমি আমার জমিতে ধানের চাষ করি। তবে উৎপাদন এতো কম যে বেশিরভাগ সময়ই খরচ উঠে না। প্রথমে ধানের চারা লকলকিয়ে বাড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত দেখা যায় গাছের গোড়া পচে গেছে বা সব ধান চিটা হয়ে গেছে। ধানের শীষে কোনও ধান নেই,” বললেন আসাদ। তিনি আরও জানালেন, তুরাগ খালের তীরে জমিটি প্রায় সময়ই পতিত পড়ে থাকে বলে তিনি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। “তবে এই দূষণের কারণে জমির দামও কমে গেছে। লোকজন অর্ধেক দামও দিতে চায় না,” যোগ করলেন আসাদ। তাদের দুর্ভোগ বন্ধে সরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে গ্রামবাসীরা বললেন, গত দু’দশক ধরে এই দূষণ চলছে। বিগত বছরগুলোতে তারা দেখেছেন, পরিবেশ অধিদপ্তর কিছু কারখানায় অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু, দূষণ কখনও থামেনি। তাদের দুর্ভোগও কমেনি। গাজীপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুস সালামকে প্রশ্ন করা হলো- সরকারের অভিযান সত্ত্বেও কেনো দূষণ থামেনি? তিনি বললেন, গাজীপুরে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শিল্প কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪৯০ ইউনিট তরল বর্জ্য উৎপন্ন করে। সেগুলোর মধ্যে ৪৫৫টি ইতোমধ্যে তাদের কারখানায় তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি প্ল্যান্ট বসিয়েছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন