ছবি সংগৃহীত

পৃথিবীর তৃতীয় মূল্যবান মসলা এলাচ

ফজলুল করিম রনি
লেখক
প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০১৩, ২১:২৪
আপডেট: ২৪ জুন ২০১৩, ২১:২৪

খেতে বসে দাঁতের নিচে এলাচ দানা পড়লে মুখ বিকৃত হয়ে যায়না, এমন মানুষ কজন আছে বলুন তো? অনেকে অবশ্য বেশ সাধ করেই চিবিয়ে থাকেন এলাচ। নানান রকম ঝাল-মিষ্টি খাবারে তো আছেই, সাথে সাথে এলাচ ব্যবহৃত হয় চা হতে শুরু করে সৌখিন পান পর্যন্ত হরেক রকম খাবারেই। কেবল সুগন্ধ নয়, এলাচের আছে নানান রকম ভেষজ গুণও। বাংলাদেশে এলাচ না জন্মালেও আমাদের দেশের বাজারে সাধারণত দুই রকমের এলাচ মেলে- সবুজ ও কালো। এছাড়াও সাদা এলাচ পাওয়া যায়। ইংরেজিতে বলা হয় Cardamom, বৈজ্ঞানিক নাম Elettaria cardamomum।

Cardamom শব্দটি ল্যাটিন ভাষা থেকে এসেছে। উদ্ভিদবিদ্যার গুরু গ্রিসের থিয়োফ্র্যাস্টাস-এর মতে, এটি গ্রিসেই প্রথম পাওয়া যায়। কিন্তু বেশির ভাগ তথ্যাদি প্রমাণ করে, ভারতই এলাচের প্রকৃত জন্মস্থান। অর্থাৎ এলাচ মূলত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সম্পত্তি। নেপাল, ভুটান, ভারত, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি স্থানে মেলে। এছাড়াও গুয়াতেমালা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বীপগুলিতে পাওয়া যায়। এলাচ আদা জাতীয় বংশের আরেকটি মসলা। এবং এটি পৃথিবীর তৃতীয় মূল্যবান মশলা। দামের দিক দিয়ে জাফরান ও ভ্যানিলার পরেই এলাচের স্থান। এলাচের মধ্যে ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, জিঙ্ক, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস প্রভৃতি বিভিন্ন মাত্রায় বর্তমান। চীন,পাকিস্তান, কোরিয়া, ভিয়েতনামের আয়ুর্বেদশাস্ত্রে এলাচের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। চীনে কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমের সমস্যায় এলাচ থেকে তৈরি বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহৃত হতো প্রাচীন কাল থেকে। পৃথিবীর যে কোনও দেশে হজম এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যায় এলাচ থেকে প্রস্তুত ওষুধকে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দেওয়া হয়েছে।
আসুন জেনে নেই এলাচের কিছু গুনাগুণ-
  • ক্ষুধামান্দ্যতে এলাচের সাহায্য নেওয়া হয়। খাওয়ার আগে অল্প এলাচ গুঁড়ো জল দিয়ে খেলে একটু পরেই অত্যন্ত খিদে পায়।
  • যাদের চোখে জ্বালাপোড়া হবার সমস্যা আছে, তারা এলাচের দানার সঙ্গে সম পরিমাণ চিনি মিশিয়ে পিষে ঐ গুড়োটা খেলে উপকার মিলবে।
  • কৌষ্ঠকাঠিন্য ও জ্বর কমায় এলাচ। কয়েকটি ছেঁচা এলাচ,শুকনো বেল, দুধে অল্প পানি মিশিয়ে ভালো করে গরম করুন৷ জ্বাল দিতে দিতে যখন অর্ধেক হয়ে যাবে, তখন নামিয়ে নিন ও উষ্ণ থাকতেই পান করুন। কৌষ্ঠকাঠিন্য কমবে আর জ্বরও সেরে যাবে৷
  • বমি আটকানোর জন্য এলাচের খোসা পুড়িয়ে তা মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার মিলবে।
  • এলাচ বাড়ায় হজমশক্তি বাড়ায়।
  • শ্বাসকষ্ট ও হৃৎরোগের জন্যও অত্যন্ত উপকারি এই এলাচ।
  • কাশি বন্ধ করতে এলাচ খুবই চমৎকার। চায়ের সাথে এলাচ খান, কাশি নিরাময় হবে।
  • পেটের ফাঁপা দূর করতেও এলাচ তুলনাহীন। পেত ফাঁপলে কয়েকটি সবুজ এলাচ দানা চিবিয়ে খেয়ে নিন।
  • মুখের গন্ধ দূর করতেও এলাচ ম্যাজিকের কাজ করে।