ছবি সংগৃহীত

তারকাদের স্মৃতিতে শীতের বনভোজন

priyo.com
লেখক
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০১৪, ১১:১৩
আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৪, ১১:১৩

শীতের দিনে ব্যস্ততার অবসরে বনভোজন বা পিকনিকে যাওয়ার আনন্দই আলাদা। সারাবছর ব্যস্ত থাকায় রুটিনের বাইরে যাওয়াই হয়না তারকাদের। কিন্তু তাদের মনে পড়ে ফেলে আসা কোন এক শীতের পিকনিকের কথা। এর মধ্যে অনেক তারকা আবার বেড়াতেও গিয়েছেন শীতের সময়কে উপভোগ করতে। শীতের বনভোজনে যারা সময়ের অভাবে যেতে পারবেন না সেইসব তারকাদের শীতের আমেজে পুরনো স্মৃতি এখানে শেয়ার করা হলো। আমাদের বনভোজন মানেই ছিল পাখি শিকার করা। কয়েক বন্ধু মিলে চলে যেতাম পদ্মার চরে। সেখানে দিনে পাখি শিকার করে রাতে সেগুলো রান্না করে খেতাম। অনেক সময় পাখি শিকার করতে না পারলে পাঙ্গাসের ঘের থেকে পাঙ্গাস নিয়ে রান্না করতাম। কি মজার ছিল দিনগুলো। পুরনো দিনের কথা মনে করে এমন আফসোস করলেন অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। অভিনেতা তারিক আনাম খান জানান, ছোটবেলায় আমরা ভাইবোন এবং গ্রামের অন্যান্য বন্ধুদের নিয়ে পিকনিক করতাম। পিকনিকের ধরনটা ছিল বিভিন্ন বাড়ি থেকে চাল, ডাল, আলু, বেগুন তেল সংগ্রহ করে সবাই মিলে তা রান্না করা। সেই দিনগুলো অন্যরকম ছিল। তবে ইচ্ছে থাকলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য এ বছর পিকনিকে বা বেড়াতে যাওয়া হবে না। ছোটবেলার পিকনিকের স্মৃতি স্মরণ করলেন অভিনেতা ফারুক আহমেদ। বললেন, এস এস সি পরীক্ষা দেওয়ার পর বন্ধুরা মিলে ১০ টাকা করে চাঁদা তুলে গিয়েছিলাম সাভারে। সেখানে রান্না করেছিলাম খিচুরি আর মুরগির মাংস। বন্ধুরা মিলে অনেক আনন্দ করেছিলাম। আমার জীবনে বিদেশেও অনেকবার ঘুরতে গিয়েছি কিন্তু ঐ দিনের পিকনিক ছিল আমার জন্য শ্রেষ্ঠ পিকনিক। অভিনেতা ইমন বলেন, পিকনিক মানেই অপরিসীম মজা। পার্থক্য হল ছোটবেলায় যখন পিকনিকের জন্য স্কুল থেকে টাকা চাইত তখন দিতে পারতাম না। পিকনিকে যাবার সময় বাবা-মার বেঁধে দেওয়া নিয়মও ছিল অনেক। কিন্তু এখন নিজস্ব স্বাধীনতা এবং পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে পিকনিকে গেলেও আগের দিনের সেই মজা খুঁজে পাওয়া যায় না। শীত এলেই সেইসব দিনগুলো আমি খুব মিস করি। অভিনেতা সিদ্দিক শিগগিরই তার ফ্ল্যাটের সব পরিবারকে নিয়ে পিকনিকে যাবেন। আগের দিনের স্মৃতি মনে করলেন এভাবে, আগে আমরা ট্রাকে করে যেতাম মধুপুরের বনাঞ্চলে। ট্রাকে উঠে সবাই চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে ফেলতাম। আশেপাশের সবাই আমাদের ট্রাকের দিকে তাকিয়ে থাকত। এখন মন খারাপ হয়ে যায় এটা ভেবে যে, সাধনা করেও আর সেই বয়স, সেই দিন ফিরে পাবো না! চলচ্চিত্র অভিনেতা বাপ্পি চৌধুরী বলেন, স্কুলে পড়ার সময় স্কুল থেকেই পিকনিকে নিয়ে যাওয়া হতো আমাদের। বন্ধুরা সবাই মিলে অনেক মজা করতাম। আফসোস শুধু একটাই প্রতিবছর শীত আসে কিন্তু সেই পুরনো মজা আর হয় না। যদিও শুটিং স্পটেও আনন্দ হয়। কিন্তু বন্ধুদের সাথের সেই মিষ্টি দুষ্টুমিগুলোর স্মৃতি রয়ে যায়। ব্যস্ততার কারণে এবছরের শীতে কোথাও যেতে পারবেন বলে জানান বাপ্পি। শীতের পিকনিক মানেই চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আঁচলের দুষ্টুমি। বললেন, পাঁচ ছয় বছর আগেও শীতের সময় আমাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পিকনিক করতাম । সাথে থাকত আমার চারজন বন্ধু। রাতের বেলা মুরগি চুরি করে রান্না করে পিকনিক করতাম আমরা সবাই। আর সকাল বেলা খেজুরের রস চুরি করে খেতাম। অভিনেত্রী হবার পর সে সুযোগ আর হয় না। খুব মিস করি সেই দিনগুলো। এবার মনে হয় শুটিংয়ের কারণে যাওয়া হবে না কোথাও। আজ থেকে বার বছর আগে মাধবকুন্ডে গিয়েছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা সাইমন। সেখানে তার অভিজ্ঞতা জানালেন এভাবে, মাধবকুন্ডে যাবার সময় গাড়িতে উঠেই বন্ধুরা মিলে গান গাইতে গাইতে গলা ভেঙ্গে ফেলেছিলাম। পরেরদিন দিন আর কথা বলতে পারছিলাম না। আমাদের অবস্থা দেখে অন্য সবাই খুব হেসেছে। সেইবার আমরা অনেক মজা করেছিলাম। ঐ পিকনিকের কথা আমার স্মৃতিতে গাঁথা রয়েছে আজও। দেশের অবস্থা আর কাজের ব্যস্ততায় এবার পিকনিকে যাওয়া হবে না আমার। মেহজাবিন বললেন, ২০০৯ সালে রাকেশ ভাইয়ার সাথে প্রথম নাটকের শুটিং ছিল। শুটিং এ সিমেন্ট দিয়ে আমাকে শোবার একটা জায়গা করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বসে থেকে আমি বরফের মত ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলাম। আমি আজও কেঁপে উঠি সেই রাতের ঘটনা মনে করে। আলাদা করে কোন পিকনিক আমার জীবনে আসেনি। তবে সেই রাতে আমরা সবাই মিলে পিকনিকের মত মজা করেছিলাম। সেটা ছিল আমার জীবনের মনে রাখার মত একটা শুটিং পিকনিক। পিকনিকে গিয়ে বড় ধরনের বিপদে পরেছিলেন অভিনেত্রী লারা লোটাস। জানালেন, দু`বছর আগের কথা। পরিবারের সবাই মিলে কক্সবাজার যাওয়ার সময় রাত হয়ে গিয়েছিল। কুয়াশার কারনে গাড়ির লাইটেও সামনের কিছু দেখা যাচ্ছিল না। উপায় না দেখে সারা রাত রাস্তায় অপেক্ষা করে সকাল বেলা রওনা দিয়েছিলাম। শীতের পিকনিকের কথা মনে হলেই ভয়ঙ্কর সেই রাতের কথা মনে পড়ে। তবে কক্সবাজার গিয়ে অনেক মজা করেছি আমরা। আর কিছুদিন পরে পরিবারের সাথে শীতের বনভোজনে যাব। ছোটবেলায় বাবা মা পিকনিকে যেতে দেয়নি ইশানাকে। বললেন, গত বছর বন্ধুদেরকে নিয়ে সেন্টমার্টিনে গিয়েছিলাম। সবাই মিলে সেখানকার মিষ্টি ডাব খেয়েছি, রাতের বেলা আকাশে কুয়াশার সাথে চাঁদ দেখেছি। আমার কাছে ঐটা জীবনের শ্রেষ্ঠ পিকনিক। তবে এবছরও শীতকালীন বনভোজনে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। স্বাগতা জানান, পরিবারের সাথে কুয়াকাটায় পিকনিকে গিয়ে আমার ছোট বোন সভ্যতা পানিতে পড়ে গিয়েছিল। সেটা অন্যরকম একটা পিকনিক ছিল আমার জীবনে। তবে শীতে প্রতি বছরই পরিবারের সাথে বেড়াতে যাওয়া হয়। সেখানে মজা করি। এবারও যাব। কিন্তু কুয়াকাটার পিকনিকের কথা ভুলতে পারব না। পিকনিকের জন্য দুবাই শহরটা খুবই সুন্দর একটা জায়গা বললেন অভিনেত্রী ভাবনা। ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে পিকনিকে যাওয়া হতো না । তবে পরিবারের সাথে অনেক জায়গায় গিয়েছি। গতবছর দুবাই গিয়েছিলাম। দুবাই আমার খুব ভালো লেগেছে। আমার মতে আমার জীবনের সেরা ভ্রমণ হয়েছে দুবাই গিয়ে। অনেকদিন মনে থাকবে। এবছর অনেক ব্যস্ত থাকব। মনে হয় আলাদা করে পিকনিকে যাওয়া হবে না। শুটিং শেষ করে পরিবারের সাথে কক্সবাজারেই রয়ে গেছেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। এটা তার এবছরের পিকনিক। আর স্মৃতির কথা শেয়ার করলেন এভাবে, প্রিয়মানুষ যেখানে সেখানেই আমার ভালো লাগে। বন্ধুদের সাথে বাবা মা কখনো যেতে দেয়নি। প্রতিবছর শীতে বেড়াতে গেলেই আমার ভালো লাগে। কারণ সেখানে আমার প্রিয় মানুষগুলো থাকে। অভিনেত্রী ফারজানা ছবি বললেন, পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় আমাকে চট্টগ্রাম থেকে আসতে হয়েছিল ঢাকায়। তখন স্কুলের সবাই আমাকে বিদায় জানাতে স্কুলের মাঠে একটা পিকনিকের আয়োজন করে। ঐ পিকনিকের কথা আমার আজও মনে পড়ে। কিছুদিন পরে সপরিবারে শীতের পিকনিক করার ইচ্ছে আছে। সৌজন্যে: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম