অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত তিনি। ১৯৪৪ সালের ১ এপ্রিল পুরান ঢাকার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবার আবদুল আজিজ ও মুন্নি বেগম দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ হানিফ।  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে রাজনীতির হাতেখড়ি মোহাম্মদ হানিফের। ১৯৬৫ সালের বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর জাতীয় নির্বাচন, একাত্তরে মহান মুক্তি সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম জাতীয় সংসদে হানিফ হুইপ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া ঢাকা-১২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া, ১৯৭৬ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া , ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন, ১৯৯৪ হতে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম সরাসরি ভোটে নির্বাচিত মেয়র বা নগরপাল হিসাবে কাজ করেন।

২০০৪ সালের ভয়াল ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ট্রাক মঞ্চে শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে তার প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে রক্ষার প্রাণান্ত চেষ্টা করেন মোহাম্মদ হানিফ।

২০০৬-এর ৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাঙ্গনে এক সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। আগে মাথায় বিদ্ধ হওয়া স্পি্ন্টাররের প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে ২৮ নবেম্বর ২০০৬ দিবাগত রাতে ৬২ বছর বয়সে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।