
ছবি সংগৃহীত
সেই সময়
আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৩, ১৭:২১
উপন্যাসঃ সেই সময় লেখকঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রকাশকালঃ প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয় এপ্রিল, ১৯৮১ সালে ও দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় এপ্রিল, ১৯৮২ সালে পুরস্কারঃ ১৯৮৩ সালে এই উপন্যাস বঙ্কিম পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে অ্যাকাডেমি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে। সেই সময় বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত একটি উপন্যাস । উপন্যাসটির মূল বিষয়বস্তু ঊনবিংশ শতাব্দী তে বাঙালির নবজাগরন । ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং মাইকেল মধুসূদন দত্ত এই উপন্যাসের দুটি ঐতিহাসিক চরিত্র । উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল দেশ পত্রিকাতে । এই সেই সময় যখন কলকাতার বাবুসমাজ, সুরা, নারী ও বুলবুলি-বিলাসে মগ্ন, যখন নব্যশিক্ষিত যুবকেরা প্রাণপণে ইংরেজি-অনুকরণে মত্ত, গ্রাম নিঃস্ব করে প্রজাপ্রসাশনের অর্থে চলছে সংস্কৃতি চর্চা, সমাজ ও ধর্ম সংস্কার, তরুণ বিদ্যাসাগর রাত্রি জেগে রেডির তেলের আলোয় রচনা করছেন বাংলা গদ্যভাষা, জেগে উঠেছে মধ্যবিত্ত শ্রেনী, এই সেই সময়। হ্যাঁ, একটি বিশেষ সময়ই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এই উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র। তিনি নিজেও এ উপন্যাস সম্পর্কে লিখতে গিয়ে বলেছেন, “আমার কাহিনীর পটভূমিকা ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দ। এবং এই কাহিনীর মূল নায়কের নাম সময়।“ লিখেছেন, “সময়কে রক্ত-মাংসে জীবিত করতে হয়।“ নবীনকুমার সেই সময়ের প্রতীক। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছে নবীনকুমার নামের একজন যুবক । তার জন্ম ও ছোটবেলা থেকে মৃত্যু অবধি এই উপন্যাসের পরিধি । নবীনকুমার জমিদার সন্তান । এই চরিত্রটি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচনা করেছিলেন কালীপ্রসন্ন সিংহের চরিত্র অবলম্বনে । নবীনকুমারেরে জন্মকাহিনী থেকে শুরু করে তার জীবনের নানা ঘটনার বৈপরীত্য, শেষ দিকে এক অচেনা যুবতীর মধ্যে মাতৃরূপ দর্শন এবং উদ্ভুত ধরনের মৃত্যু, সবই সেই প্রতীকের ধারাবাহিকতা। এই উপন্যাসে মাইকেল, বিদ্যাসাগর, ডিরোজিও, হেয়ার সাহেব, দেবেন ঠাকুর- কে নেই। সমগ্র ঊনবিংশ শতাব্দীই যেন নানান চরিত্র হয়ে চোখের সামনে জীবন্ত। সেই সময়ের সামাজিক সমস্যা,বাবু কালচার,বাল্যবিবাহ ও বিধবাদের করুন অবস্থা সবই উঠে এসেছে এই উপন্যাসে । ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের কলকাতা এই উপন্যাসের পটভূমিকা । চরিত্র পরিকল্পনা ও ঘটনা বিন্যাসে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জুড়ি মেলা ভার এবং এটি তাঁর অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি উপন্যাস ।