
ছবি সংগৃহীত
জেনে নিন আলসারেটিভ কোলাইটিস সমস্যাটির প্রাকৃতিক কিছু সমাধান
আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬, ০৭:৩০
ফটো সোর্স : www.vaidjagiitsing.com
(প্রিয়.কম)- আলসারেটিভ কোলাইটিস হচ্ছে পেটের প্রদাহজনিত যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। এর ফলে বৃহদান্ত্র ও কোলনে প্রদাহ ও ঘা হয় যা রোগীর পেটে মর্মান্তিক ব্যথার সৃষ্টি করে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী অসুখ এর চিকিৎসায় থেরাপি ও অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। কানাডার অন্টারিও এর ন্যাচারোপ্যাথিক ডাক্তার বেঞ্জামিন স্নিডার বলেন, জিনগত মিথস্ক্রিয়া, পরিবেশগত কারণ ও জীবনযাপন প্রণালির কারণে আলসারেটিভ কোলাইটিস হয়। আলসারেটিভ কোলাইটিস এর উপসর্গগুলো হল- পেটের ব্যথা, ডায়রিয়া ও মলদ্বারের ব্যথা। এই উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু ভেষজ প্রতিকারের কথা জেনে নেই আসুন।
১। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া
সুস্বাস্থ্যের মূল ভিত্তি হচ্ছে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া। ডা.স্নিডার বলেন, “আলসারেটিভ কোলাইটিসের রুগীদের চিকিৎসার মূলভিত্তি হচ্ছে ডায়েট”। পশুর উপর গবেষণা করে দেখা গেছে যে, যেসব খাদ্যে সোলানিন বেশি থাকে সেসব খেলে কোলনে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে যা আলসারেটিভ কোলাইটিসের লক্ষণগুলোকে বাড়িয়ে দিতে পারে। স্নিডার বলেন, পশুদের উপর করা গবেষণা সব সময় মানুষের জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। উচ্চ সোলানিন সমৃদ্ধ খাবার স্বল্প পরিমাণে খেলে ক্ষতি হওয়ার কথা নয়। বরং এটি আলসারেটিভ কোলাইটিসকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। এই প্রকার খাবার গুলো হচ্ছে- বেগুণ, আলু, মরিচ ও টমাটো। তিনি আরো বলেন, চিনি বাদ দেয়াটা লাভজনক হতে পারে, কারণ চিনি অগ্নাশয়ের প্রদাহরোধী এনজাইমকে বাধা দেয়।
২। নিয়মিত ব্যয়াম করা
আলসারেটিভ কোলাইটিসের সাথে যুক্ত বিভিন্ন জটিলতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ব্যয়াম। এই জটিলতাগুলো হচ্ছে, হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া, ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে, আবেগীয় সমস্যা, স্ট্রেস ও ওজন বৃদ্ধি। আপনার জন্য প্রযোজ্য ব্যয়ামটি করুন। তবে অতিরিক্ত ব্যয়াম করা থেকে বিরত থাকুন। ইয়োগা করুন।
৩। স্ট্রেস কমান
গবেষণায় দেখা যায় যে, আলসারেটিভ কোলাইটিসের সমস্যাকে বৃদ্ধি করে স্ট্রেস। ২০১৩ সালে সিস্টেম্যাটিক রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে যানা যায় যে, পেটের সমস্যা আক্রান্ত ৭৪ শতাংশ মানুষের উপসর্গগুলোকে খারাপ করে মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। শিথিলকরণ কৌশল চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৪। থেরাপি
থেরাপিস্টের সাহায্য নিলে আলসারেটিভ কোলাইটিসের লক্ষণ গুলোকে কমানো যায়। জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি মানসিক চাপ ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ২০১২ সালে থেরাপিউটিক অ্যাডভান্স ইন গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে থেরাপি পেটের ব্যথা কমাতে পারে। বায়োফিডব্যাক শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে শনাক্ত করতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়, যেমন- হৃদস্পন্দন বা মাংসপেশির টান এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৫। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড
আলসারেটিভ কোলাইটিস ও দীর্ঘ মেয়াদী অসুখ কমাতে সাহায্য করে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। তাই ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ফ্যাটি ফিশ খান। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সম্পূরক হিসেবেও গ্রহণ করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
৬। অঙ্কুরিত বার্লি
৭। ফাইবার
উচ্চমাত্রার ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে আলসারেটিভ কোলাইটিসের রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। এর ফলে নিয়মিত শরীর থেকে বর্জ্য নিষ্কাশিত হয় এবং এর সাথে সাথে বিষাক্ত ও রাসায়নিক উপাদান ও বাহির হয়ে যায়।
৮। হলুদ
আলসারেটিভ কোলাইটিসের রোগীদের জন্য হলুদ অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে হলুদের কারকিউমিন থেরাপির ন্যায় কাজ করে।
এছাড়াও ভিটামিন সি গ্রহণ করুন, রক্ত স্বল্পতার সমস্যা থাকলে নিরাময়ের ব্যবস্থা নিন। নন স্টেরয়ডাল অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ঔষধ আলসারেটিভ কোলাইটিসের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে, তাই এই ধরণের ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করবেন না।
লিখেছেন-
সাবেরা খাতুন
ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ
প্রিয়.কম