ছবি সংগৃহীত

ছোট চুলে কাটছাঁট

Tahmina Sultana Chhanda
লেখক
প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০১৩, ০৭:৪৮
আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৩, ০৭:৪৮

বাঙালী নারী মানেই তার চুল হবে দীঘল কালো। এই ধারণা থেকে আমরা অনেক আগেই বেরিয়ে এসেছি। আবার ছোট চুলের সাথে পশ্চিমা ঢংয়ের পোশাক মানায় এখন এ যুক্তিও বিকল বা ব্যর্থ হয়ে পড়েছে। শাড়ি বা বাঙালীদের পোশাক-আশাকের সাথেও মানিয়ে যাচ্ছে ছোট চুল। কর্মব্যস্ত জীবনে বড় চুলের ঝামেলা অনেকেই পোহাতে চায় না। কেউ কেউ মনে করেন, গরমে ছোট চুলেই আরাম। সেই সাথে ফ্যাশনটাও হয়। আজকাল অনেক মেয়েকেই ছোট চুল রাখতে দেখা যায়। কেউ শখ করে বা ফ্যাশনের জন্য ছোট চুল রাখেন। আবার কেউ বা কাটেন প্রয়োজনে স্বস্তির জন্য। কর্মজীবী নারীরা পেশাগত ব্যস্ততার জন্যই ছোট চুল পছন্দ করে। এতে নিজেকে নির্ঝঞ্ঝাট রাখা যায়। লম্বা চুল দেখতে সুন্দর হলেও তার যত্নটা ততটাই কষ্টকর এবং সময়সাপেক্ষ। কেউ কেউ চাইলেই বড় চুল রাখতে পারে না। কারও চুল বেশি বড় হয় না। চুলের ধরন সুন্দর রাখতে অনেকে চুল ছোট করে কেটে একটা শেপে আনতে চায়। বড় চুল হলেই যে সুন্দর লাগবে এটা একেবারেই ভুল কথা। চুলের ধরন সুন্দর না থাকলে সেটা বড় করলে দেখতে বরং খারাপ লাগে। তার চেয়ে বরং মানানসই একটা কাটিং-এ নিজেকে সুন্দর করে তোলা যায়। কেমন হবে চুলের কাট চুল যেমন তেমন করে কাটলেই হবে না। চুল কাটার আগে বুঝতে হবে কাকে কোন কাটে মানায়। চুল কাটার আগে মুখের আকার ও চুলের ধরন দেখে চুল কাটতে হবে। যাদের ঘাড় লম্বা তাদের একেবারে ছোট বয়কাটটা মানায় না। তারা স্টেপ কাট, ইউ কাট, লেয়ার কাট দিতে পারেন। যাদের ঘাড় একটু খাটো তারা বয়কাট, ডায়না কাট দিতে পারেন। স্ট্রেট চুলে যে কোন কাটই মানায়। অনেকে মনে করেন, ছোট চুলে সব পোশাক মানায় না। শাড়িতেও ছোট চুল ভাল মানায়, শুধু সাজতে হয় একটু ভিন্নভাবে। আর ব্যক্তিত্বের সাথে খাপ খাইয়ে পোশাক পরিধান করলে তা অবশ্যই চমৎকার লাগবে। চুলের ছোট কাট এবার আসা যাক চুলের ফ্যাশন। চুলের ছাঁটে নিত্যনতুন নিরীক্ষা চলে সবসময়ই। সেই ধারায় নানা রকম ফ্যাশন উঠে এলেও কয়েকটি ফ্যাশনই চলছে জোরেশোরে। সামার কাটঃ পেছনে ছোট রেখে সামনের দিকে একটু বড় রাখার স্টাইলটি সামার কাট। গোলাকার চেহারা, স্বাস্থ্য একটু ভালো এবং সোজা চুলের অধিকারীদের বেশ মানাবে কাটটি। তবে চুল যদি হয় রিবন্ডিং করা, তা হলে এ কাটের দিকে না যাওয়াই ভালো। শ্যাগ : ষাটের দশকে তুমুল জনপ্রিয় ছিল এই হেয়ার স্টাইলটি। বহু বছর পর সেই ফ্যাশনটিই আবার ফিরে এসেছে নতুন ঢঙে। বর্তমানে শ্যাগে অনেক বেশি লেয়ার করে কাটা হচ্ছে চুল। যাতে চুলের ভলিউম বেশি দেখায়। এ স্টাইলের চুল কমপক্ষে কাঁধ পর্যন্ত থাকবে। চাইলে এর থেকে বেশিও রাখতে পারেন। ফরোয়ার্ড গ্র্যাজুয়েশন লেয়ার : এই ফ্যাশনটি ওয়েভি ও স্ট্রেইট চুলের জন্য। নিচ থেকে চুলের আগা পর্যন্ত সামনের দিকে লেয়ার করে কাটা হয় এ স্টাইলে। এতে লেয়ারটি গ্র্যাজুয়েলি থাকে। লম্বা চুলের জন্য এ কাটটি মানানসই। যাদের গলা ছোট ও উচ্চতা কম, তারা এ স্টাইল করবেন না। ডিসকানেকটেড লেয়ারস : বর্তমানে তরুণীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় কাট ডিসকানেকটেড লেয়ারস। স্ট্রেইট চুলে ভালো মানায়। এই কাটে চুলের ভলিউম বেশি মনে হয়। ইমো : টিনএজারদের কাছে হেয়ার কাটের একেবারে নতুন ট্রেন্ড হচ্ছে ইমো কাট। এর জন্য মাঝারি লম্বা চুল থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনেকটা শ্যাগ স্টাইলে চুল কাটা হয়। কিন্তু সামনে চুল এক সাইডে বড়-ছোট মিলিয়ে ব্যাঙস রাখা হয়। সামনের এবং কানের পাশের চুলগুলো মুখের ওপর প্রায় ছড়িয়ে থাকে। এটিকে ইমো সুইপ বলে। সোজা এবং ঢেউ খেলানো চুলে বেশ ভালো লাগবে এটি। ইমো কাটের সঙ্গে মোটা করে কাজল লাগালে দেখতে সুন্দর লাগে। ইমো কাটে পেছনের চুল অন্তত ঘাড় পর্যন্ত যেন থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। পিক্সি কাটঃ চুলগুলো খুব একটা গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করেন না অনেকেই। তাদের জন্য পিক্সি কাট। ঘাড় পর্যন্ত চুল রেখে সামনের দিকে কপাল ঢেকে রাখবে এটি। কানের দুই পাশ দিয়েও থাকবে ছন্দময় কাট। টিনএজারদের জন্য কাটটি বেশি মানানসই। পাশ্চাত্য পোশাক এবং শাড়ির সঙ্গে দেখতে ভালো লাগবে। যাদের উচ্চতা পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির বেশি, তারা এ কাটটিতে না গেলেই ভালো। ঢেউ খেলানো চুলে মানাবে ভালো। চিককাট : চুলের ধরন হতে হবে স্ট্রেইট। সাধারণত চৌকোনা মুখের মেয়েদের এ কাটটি ভালো দেখায়। চেহারার সঙ্গে যেন সুন্দরভাবে খাপ খায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি। বব কাটঃ টিনএজারদের বব কাটটি ভালো মানাবে। সব ধরনের চেহারার সঙ্গেই যাবে এটি। একটু বয়স্কদের জন্য ক্লাসিক বব কাট বেশি মানানসই। এ ছাড়া যাদের চেহারা লম্বাটে ধাঁচের, তাদের জন্যও কাটটি মানানসই। ব্যাঙসঃ ওভাল চেহারায় ব্যাঙস মানানসই। উচ্চতায় ছোট যারা, তারা একটু ছোট করে, আর যারা লম্বা তারা একটু লম্বা রাখতে পারেন। ব্যাঙস বিভিন্নভাবে কাটা যায়। সাইড ব্যাঙস, সোজা ব্যাঙস, ছোট ব্যাঙস, বড় ব্যাঙস, পুরো কপাল ঢেকে রাখার ব্যাঙস। ফেদার কাট : চোখা চোখা অনেক লেয়ার থাকে এ স্টাইলে। সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই মানিয়ে যায় এ কাটটি। ওয়েভি ও স্ট্রেইট চুলের জন্য প্রযোজ্য এটি। শ্যাভেজ : অগোছালোভাবে অসংখ্য লেয়ার করা হয়। যাদের চুল পাতলা তাদের জন্য উপযুক্ত এ স্টাইল। কারণ এটিতে চুল ঘন দেখায়। কোঁকড়া চুলের কাট কোঁকড়া চুলের সৌন্দর্যই অন্য রকম। এ চুলের অধিকারীরা চুল নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করলেই ভালো। স্টে লেয়ার কাটে থাকলেই দেখতে বেশি ভালো লাগবে। সেটা যেকোনো চেহারার সঙ্গেই মানিয়ে যাবে। তবে চেহারাবিশেষে চুল একটু ছোট-বড় হবে। স্কুলপড়ুয়া��ের চুলের কাট স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের উচিত যতটা সম্ভব সাধারণভাবে চুল কাটা। লেয়ার, ব্যাংগস, স্টেপ যতটা সম্ভব কম করতে হবে। এতে করে টিনএজ লুকটি বজায় থাকবে। এই গরমে চুলের যত্ন নিন বিশেষভাবে। তৈলাক্ত খাবার কম খাবেন। পানি, সবজি, ফল বেশি করে খান। প্রয়োজন হলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করুন। চুল পরিষ্কার রাখতে হবে ঠিকমতো। তিন-চার মাস পরপর শ্যাম্পু বদলে ফেলুন।