ছবি সংগৃহীত

গুণে ভরা ফল সফেদা

nusrat jahan champ
লেখক
প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৩, ১২:২১
আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৩, ১২:২১

সফেদা আমাদের অতি পরিচিত একটি ফল। যারা সফেদাকে দেশি ফল মনে করে একটাকে খুব একটা পাত্তা দেন না, তারা জেনে খুশি হবেন, সফেদা মোটেও আমাদের দেশি ফল নয়। এর আদি নিবাস মেক্সিকোর দক্ষিণাংশে, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল। স্প্যানিশ উপনিবেশ আমলে এই ফল ফিলিপাইনে আনা হয় এবং পরে তা ভারতীয় উপমহাদেশে ঢুকে পড়ে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও মেক্সিকোতে প্রচুর পরিমাণে সফেদা জন্মে। সফেদা বহুবর্ষজীবি, চিরসবুজ বৃক্ষ। সফেদা কোথাও কোথাও সবেদা নামেও পরিচিত। এর ইংরেজি নাম Sapodilla এবং বৈজ্ঞানিক নাম Manikara zapota। সফেদা খুবই পুষ্টিকর একটি ফল। প্রতি ১০০ গ্রাম সফেদায় রয়েছে ৮৩ ক্যালরি, ৩.৯ গ্রাম মিনারেল, ৫.৬ গ্রাম ফাইবার, ১৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ১৪.৭ গ্রাম ভিটামিন। সফেদা ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি ডেজার্টের উপকরণ হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। সফেদা যেহেতু এমনিতেই স্বাদে মিষ্টি তাই মিল্কশেক বা ফিরনি তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। এটা দিয়ে ডেজার্ট সস ও আইসক্রিমও তৈরি করা যায়। সফেদার রয়েছে নানা ভেষজ গুণ। যেমন - *সফেদায় কোনো ফ্যাট নেই। যারা মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য সফেদা আদর্শ ফল। এতে ক্যালরি বাড়ার সম্ভাবনা কম, আবার খেতেও সুস্বাদু। *সফেদায় যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি রয়েছে। ভিটামিন-এ চোখ, ত্বক ও হাড়ের জন্য ভালো। ত্বকের মিউকাস মেমব্রেন গড়ে তুলতে ভিটামিন-এ সহায়তা করে। ভিটামিন-সি ইমিউনিটি গড়ে তোলে, ত্বক, চুল ও দাঁত ভালো রাখে। অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে। নিয়মিত সফেদা খেলে ওরাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, দাঁত ভালো রাখে। *পাকা সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, কপার, আয়রন। ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে ফোলেট, নিয়াসিন ও প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড। এসব খাদ্য উপাদান মেটাবলিক ফাংশন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। *সফেদায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। *ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ সফেদা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। *ট্যানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে সফেদা ত্বক উজ্জ্বল রাখতে ও চুলের চকচকে ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। ট্যানিনে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। *কোষ পুনর্গঠনে সফেদা ব্যাপক সহায়তা করে। *ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা বা সর্দির সমস্যা কম রাখতে সফেদা সাহায্য করে। *সফেদা কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ওজন কম রাখতে সাহায্য করে। *অর্ধেক পাকা সফেদা পানিতে ফুটিয়ে এর ক্বাথ বের করে ডায়রিয়া উপশমে ব্যবহার করা হয়। *সফেদার বীজের নির্যাস কিডনির পাথর সারাতে আয়ুর্বেদে ব্যবহার করা হয়। *সফেদার পাতা ও ছাল নানা রকম ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে সফেদার পাতার রস ঠান্ডার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। *সফেদার বীজ বেটে পেস্ট করে পোকামাকড়ের কামড়ের ক্ষতে লাগালে ব্যথা কমে যায়।