ছবি সংগৃহীত

গরু নিয়ে ১৭ টি চমকপ্রদ তথ্য!

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০১৩, ০৭:১৬
আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৩, ০৭:১৬

“গরু একটি গৃহপালিত প্রাণী। এর একটি মাথা, দুটি শিং, দুটি চোখ, চারটি পা ও মাছি তাড়ানোর জন্য একটি লেজ আছে। গরু আমাদেরকে দুধ দেয়... “ ছোটবেলায় প্রায় সবারই গরুর রচনা লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গৃহপালিত প্রাণীর কথা বলা হলে সবার আগে আসবে বড় বড় চোখের এই শান্ত-শিষ্ট প্রাণীটির নাম। চলুন জেনে নেয়া যাক মানুষের অতি পরিচিত গরু সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য। (১) বর্তমানের গৃহপালিত গরুগুলো আসলে "অরক্স" নামে বন্য গরুদের বংশধর। প্রায় ১০,৫০০ বছর আগে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে এদেরকে প্রথম পোষ মানানো হয়। আর তাদের ৮০ টি প্রজাতি থেকে পুরো বিশ্বে এখন প্রায় ১.৩ বিলিয়ন গরু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। (২) ২০০৯ সালে বিজ্ঞানীরা যখন প্রথম গরুর জিনোমের ম্যাপিং করলেন তখন তারা দেখলেন, গরুর দেহে ২২,০০০ জিন রয়েছে। এর মাঝে ৮০% জিনের সাথেই মানুষের দেহে থাকা জিনের মিল রয়েছে। (৩) ইংরেজি ‘Cattle’ শব্দটি মূলত এসেছে ফরাসি শব্দ "chatel’ থেকে। এটি থেকে আবার ইংরেজি ‘Chattel’ শব্দটি এসেছে যার অর্থ অস্থাবর সম্পত্তি। এখনো বিশ্বের অনেক দেশে প্রচুর গবাদি-পশু থাকাকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়। (৪) অন্য অনেক প্রাণীর লিঙ্গভেদে নাম একই- যেমন কুকুর(Dog) বা বিড়াল(Cat)। কিন্তু গরুর ক্ষেত্রে ব্যপারটা ভিন্ন। পুরুষ গরু হচ্ছে Bull(ষাঁড়), স্ত্রী গরুর জন্য ব্যবহৃত হয় Cow। আবার এক সাথে অনেক গরু বা ষাঁড়ের পালকে বলা হয় Cattle বা গবাদিপশু। (৫) গরু দিনের ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা শুয়েই কাটিয়ে দেয়। (৬) গরু দৈনিক ৪ ঘণ্টা ঘুমায়। (৭) একটি দুধেল গাভী প্রতিদিন ১০০ পাউন্ডের মত খাবার খায়। (৮) যখন একটি গরু খাবার খায় সেটি পেটে হজম হওয়ার পর গরুটি দৈনিক ২৫০ থেকে ৫০০ লিটার পর্যন্ত মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করে। (৯) গবেষকরা দেখেছেন, একটি গরুকে যদি বিশেষ নামে ডাকা হয় ও তার সাথে আলাদাভাবে আচরণ করা হয় তবে গরুটি ৫০০ পিন্টস পরিমাণ দুধ বেশি প্রদান করে। পিন্ট হল তরল পদার্থ পরিমাপের একটি বিশেষ পদ্ধতি।

(১০) একদল জার্মান গবেষক দেখিয়েছেন, সূর্যের অবস্থান পূর্বপশ্চিম যেদিকেই হোক কিংবা বাতাস যেকোন দিক থেকেই প্রবাহিত হোক না কেন, একটি গরু সব সময় পৃথিবীর ভৌগলিক উত্তর কিংবা দক্ষিণ মেরুর দিকে মুখ করে থাকে। কেন এরকম হয় সেটা এখনো এক বিরাট রহস্য। (১১) গরু প্রায় ৩০০ ডিগ্রি কোণে যেকোন কিছু দেখতে পায়। তবে সামনে ডান দিকে ও পেছনের দিকে এটি একদমই দেখতে পায় না। (১২) গরুদের নিজেদের মাঝে যথেষ্ট বন্ধুত্ব বিদ্যমান। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, একই পালের গরুদের পৃথক করে ফেলা হলে তারা বেশ অস্থির হয়ে যায়। তাদের হৃদস্পন্দনের হার কমে যায়। (১৩) গরুরা লাল রঙ দেখতে অক্ষম। ষাঁড়ের খেলাতে এদের সামনে লাল রঙ এর কাপড় নাড়ানো হয় শুধু এদেরকে উত্তেজিত করে তোলার জন্য। (১৪) মানুষের যেমন অঞ্চলভেদে বাচনভঙ্গিতে ভিন্নতা আছে ঠিক একইভাবে গরুদের মাঝেও আছে! একদল কৃষক পর্যবেক্ষণ করে দেখেন যে, তাদের গরুদের ‘হাম্বা’ ডাকের মাঝে ভিন্নতা রয়েছে। একেক অঞ্চলের গরু একেকভাবে ডাকে। ভাষাবিজ্ঞানীরা এই ব্যপারটির সাথে একমত পোষণ করেছেন। (১৫) গরুদের ঘ্রাণশক্তি অনেক ভাল। তারা ৬ মাইল দূর থেকেও যেকোন কিছুর গন্ধ অনুভব করতে পারে। (১৭) ২০০৯ এ অনুষ্ঠিত Royal Agricultural Winter Fair-এ এযাবতকালের সবচেয়ে দামি গরুটি কেনা হয়। ১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের এই গরুটির নাম ‘মিসি’। [এই ফিচারের প্রচ্ছদে দেয়া ছবিটিই এই মূহুর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি গরু]