ছবি সংগৃহীত

কীভাবে বলবেন অপ্রিয় সত্য?

প্রিয় লাইফ
লেখক
প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫, ০৮:৫০
আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫, ০৮:৫০

ছবি- আজিম এলাহী (প্রিয়.কম) সদা সত্য কথা বলিবে - এই শিক্ষাটি যে আমাদের পদে পদে কত বিপদে ফেলে, তা আর বলার নয়! সত্য কথা বলার এবং সহ্য করার মধ্যে মাহাত্ম্য আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সত্যি কথা বলতে পারলে বেশ হালকা লাগে এটাও ঠিক। তবে কিছু সত্যি কথা বলা যতটা কঠিন, শোনাও কিন্তু ঠিক ততটাই। কিছু পরিস্থিতিতে সত্যি কথা না বলাই ভালো - এটা সবাই জানি, কারণ এতে কারো ক্ষতিবৃদ্ধি হয় না। কিন্তু কিছু সময়ে সত্যি কথাটা সহ্য করা বা চেপে রাখাও খুবই কষ্টকর। ক্ষতিকরও। অনেক করে বলতে চাইছেন। কিন্তু বার বার আটকে যাচ্ছেন। সামনের মানুষটি কী মনে করবেন? বন্ধুবিচ্ছেদ হবে না তো? সেসব ক্ষেত্রে অপ্রিয় সত্যি কথাটা কীভাবে বলবেন, জেনে নিন তারই কিছু কৌশল।

কেন বলা দরকার

কেন কথাটা বলা দরকার - এই বিষয়টা আগে ভালো করে ভেবে দেখুন। যাকে অপ্রিয় সত্যটি বলতে যাচ্ছেন, না বললে কি তার বা আপনার কোনো বিশেষ ক্ষতি হবে? না কি তাকে শুধু সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়াটাই আপনার লক্ষ্য? যদি তাই হয় তাহলে জেনে রাখুন, এভাবে কিন্তু কাউকে শোধরানো যায় না। আপনার সামনের মানুষটি হয়তো আপনাকে ভয় পাবে বা এড়িয়ে চলবে। কিন্তু কখনোই সমীহ বা শ্রদ্ধা করবে না।

আরেকবার ভাবুন

যে কথাটা বলতে যাচ্ছেন তা শুনে সামনের মানুষটি খুশি হবে না তা তো বুঝতে পারছেন। তার প্রভাব যে ব্যক্তিগত সম্পর্কে পড়বে না, তাই বা কে বলতে পারে? কথাগুলো বলে ফেলার আগে আরেকবার চিন্তা করে নিন। শুধু প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কথাগুলো বলছেন না তো? সত্যিই কি অপ্রিয় কথাগুলো বলা প্রয়োজন? যদি বলতেই হয় তাহলে কীভাবে বলবেন - এসব ভেবে তবেই এগোন। কেমনভাবে কথাটা বলবেন, কী কী প্রশ্ন আসতে পারে এবং তার সম্ভাব্য উত্তরগুলো নিজের মনেই ঝালিয়ে নিন। এভাবে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। অনেক দৃঢ়তার সাথে কথাগুলো বলতে পারবেন এবং আশা করা যায় আপনার কথার প্রভাবও গভীরভাবে পড়বে ও কার্যকর হবে।

সঠিক ব্যক্তি

সব কথা সবার মুখে মানায় না। কথাগুলো যত গুরুত্বপূর্ণই হোক না কেন, যে কেউ বললেই যে কাজ হবে তার কোনো মানে নেই। অপ্রিয় সত্য বলার ক্ষেত্রে আপনিই ঠিক লোক বা 'রাইট পার্সন' কি না সেটা ভেবে দেখুন। অপ্রিয় সত্যটা কে বললে সঠিক কাজ হবে সেটা মাথায় রেখে এগোন।

আলাদাভাবে বলুন

কেউই চান না সবার সামনে নিজের দুর্বলতা বা দোষ প্রকাশ হোক। তাই অপ্রিয় সত্য বলার সময় বক্তা এবং শ্রোতা ছাড়া অন্য কেউ সামনে না থাকাটাই বাঞ্ছনীয়। যাকে বলতে যাচ্ছেন তার জন্য সেটা যত ভালোই হোক না কেন, সবার সামনে সেটা শোনার মতো চারিত্রিক দৃঢ়তা তার নাও থাকতে পারে।

ছোট্ট একটা ভূমিকা

দুজনে আলাদা হয়ে কথা বলার সময় একটা ছোট্ট ভূমিকা খুব জরুরি। আপনি কেন এই অপ্রিয় কাজটা করতে যাচ্ছেন, কথাটা বলার ফলে তার কী লাভ হতে পারে ইত্যাদি যতটা সংক্ষেপে সম্ভব বুঝিয়ে বলুন। আপনি যে কোনোমতেই তার কোনো ক্ষতি চান না সেটা মনে করিয়ে দিন। এতে তার মনে একটা ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি হবে। তিনি আপনার কথা মন দিয়ে শুনবেন।

প্রতিক্রিয়া করার সময় দিন

আপনি তো আগে থেকেই জানেন যে আপনার কথা শুনে শ্রোতা খুব একটা খুশি হবেন না। প্রতিক্রিয়া তিনি করতেই পারেন। ভালো করতে গিয়ে যদি উল্টো দোষারোপের সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে সেটাও খানিকক্ষণের জন্য মেনে নিন। এই প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমেই কিন্তু আপনি তার দৃষ্টিকোণের কথা জানতে পারবেন। যদি কোনো ভুল ধারণাও থেকে থাকে তাহলে এর মাধ্যমেই সমাধান হয়ে যাবে।

গোপনীয়তা রাখুন

অপ্রিয় সত্য কথা বলতে আপনি বাধ্য হয়েছেন। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও কারো মনে দুঃখ দিয়েছেন। সেই ঘটনা যদি আরো মানুষকে জানান, তাহলে সেটা রসালো গসিপ হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগবে না। তাই এই ব্যাপারে গোপনীয়তা বজায় রাখুন। তথ্যসূত্র: প্রিয়াঙ্কা বসু, সানন্দা, ৩০ জানুয়ারি ২০১২