প্রতিবন্ধীদের মূলধারায় যুক্ত করতে হবে
আজ ৩ ডিসেম্বর ৩৪তম আন্তর্জাতিক এবং ২৭তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ দিবসটি পালিত হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিনটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো : ‘Fostering disability inclusive for advancing social progress’, অর্থাৎ ‘প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ি, সামাজিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করি’।
দিনটি উপলক্ষ্যে মিরপুরের জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে পাঁচ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা পুরস্কার পাবেন, তাদের মধ্যে আছেন ১০ জন সফল প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, প্রতিবন্ধিতা উত্তরণে কাজ করেন এমন তিন ব্যক্তি, প্রতিবন্ধিতা উত্তরণে কাজ করেন এমন তিন প্রতিষ্ঠান, প্রতিবন্ধীদের সফল দুজন পিতা-মাতা এবং সফল দুজন কেয়ার গিভার। জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসে এ দিবস উপলক্ষ্যে মেলারও আয়োজন করা হয়েছে। এ মেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিভিন্ন উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শিত হবে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এ আয়োজনের মাধ্যমে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিজ উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী সোনালি আঁশের সমসাময়িক নকশার সৃজনশীলতা এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন কারুশিল্প নতুনরূপে তুলে ধরা হবে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্ক্রলে দিবসের প্রতিপাদ্য প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোবাইল ফোন অপারেটরদের খুদে বার্তা প্রেরণ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে।
শারীরিকভাবে অসম্পূর্ণ ও অসংগতিসম্পন্ন মানুষের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতা প্রদর্শন এবং তাদের কাজের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সম্মান জানানোর জন্য এ দিবসটির বিশেষ গুরুত্ব আছে। কর্মক্ষেত্রে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে প্রয়োজন অনুযায়ী এক্সেস, দক্ষতা ও জ্ঞান উন্নতি করে মূলধারায় আনতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বৈষম্য কমিয়ে এনে প্রতিবন্ধীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০-এ বলা আছে, কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পূর্ণ অন্তর্ভুক্তি, অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব ছাড়া সামাজিক অগ্রগতি অসম্ভব।
প্রতিবন্ধী শিশু ও ব্যক্তিরা ক্রমাগত বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। দারিদ্র্যের উচ্চ ঝুঁকি, উপযুক্ত কাজের সীমিত সুযোগ এবং কম মজুরি, সামাজিক সুরক্ষার ঘাটতিসহ বিভিন্নভাবে তারা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। তাদের চলাফেরা বা যাতায়াতের সুবিধারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাদের জন্য উপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সহায়ক পরিবহণ জরুরি হয়ে পড়েছে, যা অবশ্যই প্রতিবন্ধীবান্ধব হতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বা ব্যক্তিদের জন্য অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ রয়েছে, যার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস