ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই...

প্রথম আলো সৈয়দ আব্দুল হাদী প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৪০

‘গোলাভরা ধান, গোয়ালভরা গরু, পুকুরভরা মাছ আর ঘরভরা সন্তান’—এই ছিল একসময় বাঙালির আদর্শ সুখী পরিবারের প্রত্যাশা। এখন গোয়ালভরা গরুও নেই, পুকুরভরা মাছও নেই, গোলাভরা ধানও নেই। তবে সুখের কথা, ঘরভরা সন্তানের কোনো অভাব নেই। এই অভাব নেই-এর প্রভাব নিয়ে ভেবেছিলাম আর লেখালেখি করব না—আমার ধারণাটাই হয়তো ভুল। কারণ, সেসব লেখা (প্রথম আলোতেই প্রকাশিত) হালে পানি পায়নি, কারও সমর্থন তো দূরের কথা।


আমার অজ্ঞতাপ্রসূত অনধিকারচর্চা হিসেবে হয়তো তিরস্কৃতও হয়েছে। তবে কয়েক দিন আগে একজন রিকশাচালকের টেলিভিশন ক্যামেরায় দেওয়া মন্তব্যটি শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হলাম। জ্ঞানী-গুণীরা না হলেও একজন সাধারণ শ্রমিকের উপলব্ধি থেকে আমার বিশ্বাসের সমর্থন তো পেলাম। তাঁর কথার মধ্যে আমার বিশ্বাসেরই প্রতিধ্বনি খুঁজে পেলাম। তিনি বলেছিলেন, এ দেশ ‘ফেরেশতা’ এলেও চালাতে পারবেন না, কারণ এ দেশে শুধু মেট্রোরেলের নিচে যত মানুষ রাত যাপন করে, পৃথিবীর বহু দেশেও এত মানুষ নেই।


মানবসম্পদ যে শুধু আশীর্বাদই নয়, উপচে পড়া এ সম্পদ যে অভিশাপও হতে পারে, একজন বিজ্ঞ নয়—অজ্ঞ (?) সাধারণ মানুষের কথার মধ্যে তার পর্যবেক্ষণ লক্ষ করা গেল। তবে এ তো অতি সাধারণ একজন মানুষের পর্যবেক্ষণ। এ প্রসঙ্গে কিছু অসাধারণ মানুষের পর্যবেক্ষণ লক্ষ করা যাক।


ভারতের বিখ্যাত লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী খুশবন্ত সিংয়ের একটি মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য,  ‘...আমি মোটামুটি নিশ্চিত, আজকের দারিদ্র্য, অজ্ঞতা, বস্তি, দুর্নীতি ও অপরাধ—এসবের বেশির ভাগই অতিরিক্ত জনসংখ্যা এবং আমরা যে আত্মঘাতী হারে সন্তান জন্ম দিচ্ছি, তার ফল।’ কথাগুলো আমাদের ক্ষেত্রেও
শতভাগ প্রযোজ্য।


অজ্ঞতা, উদাসীনতা, ধর্মীয় বিধিবিধানের অপব্যাখ্যা ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা আমাদের এই ক্ষুদ্র দেশের জন্য কী দুর্ভোগ যে ডেকে আনছে, তা বোঝার ক্ষমতা যে আমাদের নেই তা নয়। কিন্তু জনতুষ্টির বিবেচনায় রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে লেখক, বুদ্ধিজীবী, তথা সিভিল সোসাইটি—সবাই বিষয়টিকে সচেতনভাবে এড়িয়ে যান (অধম ক্ষমাপ্রার্থী)।


কিছুদিন আগে একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে একটি সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটি দেশে আঠারো কোটি মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম।’


এই সংগ্রাম থেকেই জন্ম নিচ্ছে যত অশিক্ষা, অপরাধ, প্রতারণার নব নব কৌশল। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়বে একচিলতে জমির জন্য ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, চাঁদাবাজি, দখলদারি ইত্যাদি নিয়ে খুনোখুনি, তথা নানা ধরনের অপমৃত্যু। মানুষের জীবনের যেন কোনো মূল্য নেই। সরবরাহ বেশি হলে মূল্য কমে যাওয়া—অর্থনীতির এ সাধারণ নিয়ম যেন এ ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।


একটি মানবশিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বেঁচে থাকার অধিকারও প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাভাবিক পন্থায় সুযোগ না পেলে যেকোনো পন্থায় সে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবেই। চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস ইত্যাদির জন্মও এভাবেই। তবে ‘কচু কাটতে কাটতে ডাকাত’—একপর্যায়ে বেঁচে থাকার এ যুদ্ধ ওপরে ওঠার সংক্ষিপ্ত পন্থা হয়ে ওঠে।


আমাদের দেশে এই শর্টকাট পন্থাটি সমাজের সর্বস্তরেই অত্যন্ত জনপ্রিয়। বহু বিত্তশালীর উত্থানের পেছনেও এই শর্টকাট পন্থা সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিও এই সমাজবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করেছে। তরুণেরা লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, হচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও